পায়রা বন্দরকে এ অঞ্চলের জন্য অবশ্যই টেকসই ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি বন্দরের জন্য নিজস্ব ড্রেজার থাকা একান্ত প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশে এমন কোনো বন্দর নেই যেখানে ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন পড়ে না। আশা করছি, আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের নিজস্ব ড্রেজার এবং একটি পূর্ণাঙ্গ ড্রেজিং সেকশন চালু করা সম্ভব হবে।
আজ রবিবার (২০ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় কুয়াকাটার একটি অভিজাত হোটেলে ‘পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান’ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি বন্দর প্রতিষ্ঠা ও পূর্ণ কার্যকারিতায় পৌঁছাতে ১০ বছর কোনো বিষয় নয়, বরং ২০-২৫ বছর সময় লাগে। তখনই বলা যায় বন্দরটি আসল উন্নয়নের পথে।
পায়রা বন্দরের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, এটি সরলরৈখিক ও প্রশস্ত চ্যানেলের অধিকারী একটি বন্দর। এর ভৌগলিক অবস্থান এবং দেশের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বহুমুখী যোগাযোগের সুবিধা এই অঞ্চলকে ভবিষ্যতের একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৩ শতাংশ আমদানি-রফতানি চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক পরিচালিত হয়। তবে দ্রুত শিল্পায়ন এবং রপ্তানি খাত সম্প্রসারণের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ বৈদেশিক বাণিজ্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে পায়রা বন্দরের গুরুত্ব আরও বাড়বে।
মাস্টারপ্ল্যান অনুষ্ঠানেও উপদেষ্টা বলেন, দেশে একদিকে যখন নতুন কোনো পোর্ট গড়ার কথা বলা হয়, তখনই নানা ধরনের আশঙ্কা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো অপারেটর নিয়োগের প্রসঙ্গ উঠলেই বলা হয় ‘দেশ শেষ’। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের বাস্তবভিত্তিক ও টেকসই পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চল দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিতে রূপ নেবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পে নিযুক্ত বুয়েটের টিম লিডার অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহম্মেদ এবং আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির (নেদারল্যান্ডস) টিম লিডার মেনো মুইজ। অনুষ্ঠানে বন্দরের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, সামরিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।