ক্যাটাগরি: রাজনীতি

এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি ছাত্রশিবিরের

গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রায় হামলা চালিয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এরই প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। বিক্ষোভে ছাত্রশিবির নেতারা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে এটি রাজু ভাষ্কর্য ঘুরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর পার হয়ে আবার রাজু ভাষ্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, ক্যান্সার যেভাবে মানুষের শরীরে নিরব ঘাতক হিসেবে থাকে, আওয়ামী লীগও এভাবে লুকিয়ে আছে। গত বছরের ষোল জুলাই তারা আবু সাইদ, ওয়াসিম, শান্তদের শহিদ করেছে। এর এক বছরের মাথায় তারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করুন। আপনারা আওয়ামী লীগকে উচিত শিক্ষা দিতে না পারলে জনগণ আপনাদের উচিত শিক্ষা দেবে।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাইয়ের পরে যে গোষ্ঠী গত ১৬ বছর সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাদের বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা গোপালগঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, জুলাইয়ের এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের কোন জায়গা হবে না।

তিনি আরো বলেন, জুলাই রক্তের উপর আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) ক্ষমতায় বসেছেন। আপনারা এখানে ভোগ বিলাসের জন্য বসেননি। আপনারা যদি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করেন, খুনি হাসিনার যেই পরিণতি হয়েছিল তার চাইতে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তরের শিবির সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সকল সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ জেলাটিকে (গোপালগঞ্জ) নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে।গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের কোন জেলা নয়। গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে একখন্ড ছোট্ট দিল্লি।

এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো গোপালগঞ্জের যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রজনতা নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হব।

ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাইয়ের এক বছর পার হলেও বাংলাদেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। এখনো জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একইসাথে, তাদের দ্রুত গ্রেফতারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, আমরা কি হাসবো না কাঁদব মাঝে মাঝে তা খুঁজে পাই না। সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, গোপালগঞ্জের গুটি কয়েকের লাফালাফি দেখে আমাদের মাঝে মাঝে হাসি পায়। আবার দুঃখ হয়, ইন্টারিম গভর্নমেন্টের এই ব্যর্থতা দেখে। তিনি অভিযোগ করেন, ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যেকটা প্রশাসন প্রত্যেকটা ক্যাটাগরিতে চরমতম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত সকল সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা যারা, গোপালগঞ্জে তারা আশ্রিত ছিল। তারা সবাই মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এখানেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট কন্ঠে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক আছে এই দায়িত্ব পালনের জন্য।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার