বিভিন্ন কেলেঙ্কারির জন্ম দেওয়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবার লভ্যাংশ ঘোষণা নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড ঘটিয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার ১৪ মাস পর তা বাতিল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে লভ্যাংশ বাতিলের ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে গত বছরের ২৯ এপ্রিল ব্যাংকটি ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। এর মধ্যে ছিল ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ৫ শতাংশ বোনাস।
ব্যাংকটির একটি মূল্য সংবেদনশীল বিজ্ঞপ্তি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আলোচিত বছরে (২০২৩) ব্যাংকটির কোনো মুনাফা না হওয়ায় শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়া সম্ভব নয়। এতে আগের ঘোষিত লভ্যাংশ বাতিল হয়ে যায়। গত বছরের ২৭ আগস্ট এই ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকটির আগের বছরের নিরীক্ষিত হিসাববিবরণী সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। আগের হিসাববিবরণীতে মুনাফা দেখানো হলেও সংশোধিত হিসাববিবরণী অনুসারে, ওই বছরে ব্যাংকটি প্রকৃতপক্ষে লোকসান করেছে।
গত বছরের ২৯ এপ্রিল গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক জানিয়েছিল ২০২৩ সালে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা আয় (ইপিএস) করেছে। এর ভিত্তিতেই ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ৫ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করে। এর রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৬ জুন, ২০২৩। ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্যাংকটিকে অনুমতিও প্রদান করে। ব্যাংকটি ঘোষিত লভ্যাংশসহ বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনার জন্য গত বছরের ৮ আগস্ট বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করে। তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর তার সরকারের সুবিধাভোগী ও ব্যাংক-লুটেরা এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক আর ঘোষিত এজিএম করতে পারেনি।
ব্যাংকটির সংশোধিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে শেয়ার প্রতি ২১ টাকা ৭৯ পয়সা লোকসান হয়েছে। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট দায় দাঁড়ায় ৯ টাকা ১৪ পয়সা।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের আজকের বৈঠকে বাতিল হয়ে যাওয়া বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৯ আগস্ট সকাল ১১টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে রেকর্ড তারিখ আগেরটিই (৬ জুন, ২০২৩) বহাল থাকবে।