প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়া আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এই সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার কাবুলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনভের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মুত্তাকি রাশিয়ার এই স্বীকৃতিকে ‘ইতিবাচক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সম্মানের নতুন অধ্যায়’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এটিকে অন্য দেশগুলোর জন্য ‘উদাহরণ’ বলে দাবি করেন।
তালেবানরা ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বিনিয়োগের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, যদিও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বাড়ছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তানের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, শক্তি, কৃষি, পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা আরও দৃঢ় হবে। এ ছাড়া, রাশিয়া আফগানিস্তানকে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী লড়াইয়ে সাহায্য অব্যাহত রাখবে।
তালেবানের ক্ষমতায় আসার পরও রাশিয়া আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস খোলা রেখেছিল। ২০২২ সালে রাশিয়া প্রথম দেশ হিসেবে তালেবানের সঙ্গে তেল, গ্যাস ও গম সরবরাহ চুক্তি করে।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে রাশিয়া তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাদের সঙ্গে পূর্ণ অংশীদারত্বের পথ তৈরি করে। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালিবানকে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে মিত্র হিসেবে উল্লেখ করেন।
তালিবানের শাসনকালে নারীদের ওপর কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের মতে, তালিবানের কঠোর বিধিনিষেধ ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ এবং ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’।
২০২১ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আফগানিস্তানের বিপক্ষে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বর্তমানে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও পাকিস্তান কাবুলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিলেও রাশিয়া একমাত্র দেশ যা তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।