রাষ্ট্রের মূলনীতি, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন কাঠামোসহ পাঁচ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ৬ষ্ঠ দিনের আলোচনা বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টায় রাজধানীর বেইলী রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির ‘দোয়েল মাল্টিপাস হলে’ এই বৈঠক শুরু হয়েছে।
সংলাপের শুরুতে রাষ্ট্রের মূলনীতি, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (উচ্চ কক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি), জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন কাঠামো, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি ও নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন। ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে আছেন।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় আমরা অগ্রগতির একদম শেষে, ক্ষেত্র বিশেষে আলোচনা অগ্রগতি কতটুকু, মতপার্থক্য আছে, তারপরেও আমরা আলোচনা করছি। এটার একটা ইতিবাচক দিক যে, বিভিন্ন সময়ে আনুষ্ঠানিক অনানুষ্ঠানিক এই প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করার জন্য আপনারা সবাই বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। যেসব বিষয় অমিমাংসিত সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আজকে আলোচনায় বসছি। আমরা আশা করছি ঐ বিষয়গুলোতে ঐকমত্য অর্জন করা যাবে। অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হলে, অন্য বিষয় আলোচনায় যুক্ত করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, রক্তের উপর দিয়ে আমাদের এখানে বসতে হয়েছে, বহু প্রাণের বিনিময়ে আমরা এখানে এসেছি, একদিনের সংগ্রামে আসেনি। ১৬ বছর ধরে অব্যাহত সংগ্রাম, ৫৩ বছর ধরে বিভিন্নভাবে গ্রণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম, একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম তারই একটা পর্যায়ে আমরা এখানে বসতে পেরেছি। ফলে রাষ্ট্রের স্বার্থ জাতির স্বার্থকে বুকে রেখে সবাই মিলে আমরা যেন অগ্রসর হতে পারি সেটা বিবেচনা করবেন।
‘আমি বারবার বলেছি, আপনাদের খানিকটা ছাড় দিতে হবে, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকেও আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি যে কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন পরিবর্ধন সংশোধনের মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বা জাতীয় ঐকমত্যে পৌছতে পারবো।’
আল রীয়াজ বলেন, সবাই জান বাজি রেখে লড়াই করতে পারলে এটা পারবো না কেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যতিক্রম ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে একটা হচ্ছে এখানে সবাই মিলে পরস্পরের কথা শুনছি। সহনশীলতা প্রদর্শন করছি।
কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য গত ২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। আর ঈদের ছুটির পর গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন ধরে চলছে দ্বিতীয় পর্বের এই আলোচনা।