বাংলাদেশের আর্থিক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কার নিয়ে অনলাইন বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদ-এর সাথে কথা বলেছেন বেসরকারি এনআরবি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান। তিনি এনআরবি ব্যাংকের বর্তমান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেন।
অর্থসংবাদ: আর্থিকখাত সংস্কার হলে কতটা টেকসই হবে?
তারেক রিয়াজ খান: এটা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে আমরা আশাবাদী বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের পুনর্গঠন ও সংস্কার উদ্যোগ সফল হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
অর্থসংবাদ: দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্বলতার মূল কারণ কী?
তারেক রিয়াজ খান: বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে গত ১৬-১৭ বছর ধরে যা ঘটেছে, তা দেশটির অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে ব্যাংকিং সেক্টরে ম্যানেজমেন্টের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অপ্রত্যাশিত লোন প্রোভিশন ও অবৈধ কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর বিশাল প্রভাব ফেলেছে। তবে, সরকারের উদ্যোগে এ সেক্টর সংস্কারের পথচলা শুরু হয়েছে এবং ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির সুশাসন এবং স্বচ্ছতার দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদ: রেগুলেটরি দুর্বলতায় অর্থ পাচার বাড়ে কি-না, এটাকে আপনি কিভাবে দেখেন?
তারেক রিয়াজ খান: আমাদের এজেন্ডা হচ্ছে সঠিকভাবে ডিপোজিট মবিলাইজেশন করা, ব্যাংকের জন্য লিকুইডিটি বৃদ্ধি করা এবং দেশে সুশীল অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখা। কিন্তু যখনই ব্যাংকিং সেক্টরের রেগুলেটরি ডিটেকটিভ ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসি নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়, তখনই ঘটতে পারে অপ্রত্যাশিত ও অবৈধ লেন্ডিং, যা আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এতে অর্থ পাচার, মানিলন্ডারিং এবং অবৈধ কার্যক্রম বাড়ে, যা দেশের উন্নয়ন ও ব্যাংকিং সেক্টরের সুস্থতা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অর্থসংবাদ: গভার্নেন্স শক্তিশালী হলে ব্যাংকিং সেক্টরে কী পরিবর্তন আসবে?
তারেক রিয়াজ খান: বর্তমান ব্যাংকিং সংস্কার উদ্যোগে ব্যাংকগুলোর গভার্নেন্সকে শক্তিশালী করা হচ্ছে, যাতে স্বচ্ছতা, ট্রান্সপারেন্সি এবং সঠিক রেগুলেটরি ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করা যায়। বিশেষভাবে, ব্যাংকিং সেক্টরের বোর্ড রিকনস্টিটিউশন এবং গভর্নমেন্টের সাপোর্টের মাধ্যমে এটি করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, গ্রামীণ গৃহঋণ ও এসএমই ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদ: আগামী দুই বছরে এনআরবি ব্যাংক কোন পর্যায়ে থাকবে?
তারেক রিয়াজ খান: আমি ব্যাংকিং সেক্টরের পুনর্গঠনে জোর দেওয়া এবং আমাদের ব্যাংকের ক্ষেত্রে গ্রামীণ গৃহঋণসহ এসএমই সেক্টরে আরও বেশি ফোকাস করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আনা সম্ভব হবে। এ ছাড়া, ডিজিটাল ব্যাংকিং ও ন্যানো লোনিংয়ের মাধ্যমে সেবা পৌঁছানো হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে।