জাতীয়
ভোটের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের যে সময়েই নির্বাচন হোক না কেন প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। তফসিল ঘোষণার সময় ভোটার তালিকা তৈরি থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যেদিন ইলেকশন ডেট হয় তার মাস দুয়েক আগে তফসিল হয়। মানে ৫০-৬০ দিন আগে হবে। তবে ভোটের আট-দশ মাস আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এ মুহূর্তে ঘোষণা সম্ভব নয়। ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ধারণা পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
রোববার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। সামনের কাজগুলোর বিষয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সংশোধন করা হবে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত প্রায়। দল নিবন্ধন ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের মতো বড় কাজ রয়েছে।
তফসিল কবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতদিন তো সরকারই আলোচনা করেছে, আমরা করিনি। উনাদের পজিশনটা আমাদের বুঝতে হবে। বোঝার পরে যেদিন তারিখ ঠিক হবে, অ্যারাউন্ড দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা হবে। ঐতিহাসিকভাবে তা-ই, ৫৫ থেকে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করবো। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে ধারণা পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্যে এপ্রিলের প্রথমার্ধে যে কোনোদিন ভোটের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা এবং লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণার মধ্যে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি।
ফেব্রুয়ারির ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা এলেও অফিসিয়ালি কোনো কিছু না পাওয়ায় মন্তব্য করতে নারাজ তিনি। এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে হোক- জাতীয় নির্বাচন যখনই হোক, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে আমাদের বলা হয়েছিল ডিসেম্বর থেকে জুন, আমরা সে টাইম স্পেন মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি ও এগিয়ে যাচ্ছি।’
এপ্রিলের ভোটের বিষয়ে জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ হলেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে ‘অফিসিয়ালি’ কোনো কিছু পায়নি ইসি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা এখনো প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের যখন কথাবার্তা হবে, কি ধরনের চিন্তাভাবনা করছে, তখন সিদ্ধান্তে আসতে পারবো। তারিখ নিয়ে, অমুক দিন অমুক তারিখ ইলেকশন হবে এ মুহূর্তে আমি এমন ঘোষণা দিতে পারবো না।’
সরকারের কাছ থেকে যদি ধারণা পাই তাহলে সে অনুযায়ী ইলেকশন ডেলিভার করার জন্য প্রস্তুত আছি এবং প্রস্তুতি নিচ্ছি-যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বললেও সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগেও ভোট হতে পারে বলে মত দেন।
লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
এখন আবার নতুন ডাইমেনশন এসেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, লন্ডনে যে ঘোষণাটা এসেছে অন্যদের মতো মিডিয়া থেকে যেটুকু জানেছি, এর বাইরে কিছু নেই। এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না। ভেতরে কি আলাপ হয়েছে। শুধু যৌথ বিবৃতি যেটা দিয়েছে সেটা তো আন-সাইনড; এটাই বা কতটুকু জেনুইন তাও তো জানি না। কারো স্বাক্ষর থাকলে বুঝতাম এটা সরকারের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন। তাহলে বুঝতাম এটা অফিসিয়াল ডকুমেন্ট।
‘অফিসিয়ালি কোনো কিছু না এলে কিছু করা যাবে না। ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে, আলাপের পেছনেও আলাপ থাকে। ঘোষণা একটা হয়েছে, নিশ্চয়ই ভেতরে অনেক আলাপ হয়েছে।…সেগুলোও আমাদের জানতে হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।
নিরাপত্তা উপদেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা একটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ইসি হয়তো একটা তারিখ ঘোষণা করবেন। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
বিশেষ ধরনের সরকার, বিশেষ ধরনের পরিস্থিতি, একদিকে সরকার বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে; সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করছে। বিচারটা বিচারকের হাতে ছেড়ে দিতে হবে, তবে ত্বরান্বিত করার বিষয় রয়েছে, এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সংস্কারের বিষয় রয়েছে। এসব নিয়ে সরকারই আলোচনা করছে। আমাদের ধারণা, সরকারের পক্ষ থেকে একটা তারিখ ঘোষণা হবে। কিন্তু লন্ডন সফরের পরে দায়-দায়িত্ব কিছুটা আমাদের ওপরই আসছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটু কথাবার্তা না হলে, কোনো নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘(ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন) এটা এখনো আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন আরপিও অনুযায়ী ইসি গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে। ছয় মাস/আট মাস আগে ওই তারিখে নির্বাচন হবে- এটা বলার বিধান আরপিও তে নেই। তফসিল ঘোষণার বিধান বলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঐতিহাসিক নির্বাচন উপহার দেওয়ার কথা বলেছেন। এ নির্বাচনটা করবে ইসি। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনটি করতে চাচ্ছেন।
‘আমাদের বুঝতে হবে, পরিস্থিতিটা বিশেষ পরিস্থিতি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। আমি তো একটা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট দেখেছি, রমজানের আগেও ইলেকশন হতে পারে ‘যদি’। এটাকে ফরমাল বা অফিসিয়াল ওয়েতে ভাবতে পারছি না।’
সিইসি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো কথা হয়নি। আমরা এখন আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। যখনই হয় যেন আমরা নির্বাচনটা ডেলিভার করতে পারি। আমি এখন আমার প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। এখন আমাদের ধ্যানধারণা শয়নে-স্বপনে নিজেদের প্রস্তুতি।’
‘সিইসি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তারিখ ঘোষণা করেন। দশ মাস আগে তারিখ ঘোষণা করে এমন দেখেছেন কখনো? আমরা এখনো কোনো টার্গেট ফিক্সড করিনি। সরকারের সঙ্গে যখন এক্সচেঞ্জ অব আইডিয়া হবে, তারিখ নিয়ে যত আলাপ-আলোচনা সরকারই করেছে। আমরা তো করিনি। সরকারের পরিবর্তিত কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন কি না এমন প্রশ্নে সিইসি জানান, প্রয়োজন হলে দেখা করতে পারেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। সবকিছু বৈঠক করে হবে এমন নয়, বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমেও হয়ে থাকে। সরকারের সহযোগিতা লাগবে। সরকার আলোচনা করছে, আলোচনা অগ্রগতি, বেসিস কি, চিন্তাভাবনা আমাদের বুঝতে হবে। ভিডিও দেখে তো সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। আলোচনাটা সব সময় ওখানে করছে। ভেতরের অন্দরমহলের বিষয়টি বুঝতে হবে।’
ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কয়েকটি দল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া, আল্লাহ তাদের আস্থায় নিয়ে আসুক। আমার বিশ্বাস, আমাদের দলগুলো দেশের মঙ্গল চায়। রাজনৈতিকভাবে অনেক কথা বলতে হয়, আমি এটাকে রাজনৈতিকভাবে দেখি। রাজনৈতিক সচেতন থাকবেন, দলীয় রাজনীতিতে জড়াবেন না- এমন নির্দেশনা কর্মকর্তাদের দিয়েছি।’
ইসির বিরুদ্ধে বললে একদম আহত হন না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সমালোচনাকে স্বাগত জানাই।’
একমত্য কমিশনের লিখিত কিছু না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
নির্বাচনে কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বিষয়টি বারবার স্মরণ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরেন সিইসি। আমরা কারো হুকুমে, কারো নির্দেশনায়, কারো পরিচালনায় আমরা কাজ করি না। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দলীয় স্বার্থরক্ষার জন্যে কাজ না করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
‘অতীতে যা হয়েছে, কেউ যদি মনে করে কেন্দ্র দখল, বাক্স লুট করবে তা দিবাস্বপ্ন। সে সুযোগ এবার আর পাবে না, এটা করতে দেবো না ইনশাহ আল্লাহ। সবাই সুন্দর নির্বাচন চায়।’

জাতীয়
কোনো নির্বাচনেই আর ইভিএম ব্যবহার হবে না: ইসি

আগামী জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (অব.) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রবাসীদের জন্য ভোটদানে আসছে নতুন ব্যবস্থা- তারা এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান তিনি।
তিনি জানান, প্রবাসী ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যার জন্য একটি আলাদা রেজিস্ট্রেশন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই। সব নির্বাচনই ব্যালট পেপারের মাধ্যমে আয়োজন করা হবে।
সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ জানান, আসন পুনর্নির্ধারণ বিষয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আসনপ্রতি ৪ লাখ ১৮ হাজার থেকে ৪ লাখ ২২ হাজার ভোটার বিবেচনায় সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তবে ঢাকা শহরে আসন সংখ্যা কমার সম্ভাবনা কম বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দল নিবন্ধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব রাজনৈতিক দলের কাগজপত্র সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ, তাদের মাঠপর্যায়ের যাচাই শিগগিরই শুরু হবে। অন্যদিকে, যাদের দাখিলকৃত তথ্য বা কাগজপত্রে ঘাটতি রয়েছে, তাদের ১৫ দিনের সময় দেওয়া হবে ঘাটতি পূরণে।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, আইন অনুযায়ী, তপশিল ঘোষণার বাইরে যেকোনো সময় ভোটার তালিকা সংশোধন, পরিমার্জন বা হালনাগাদ করার ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ চলমান রয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ইসির বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানান, নির্বাচন ঘিরে সব বিষয়েই দুই কমিশনের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে এবং আমরা অনেক বিষয়ে একমত অবস্থানে পৌঁছেছি।
শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাগরিক ঐক্য ও এনসিপি- উভয় দল প্রতীকটির জন্য আবেদন করলেও তা তালিকাভুক্ত করা হয়নি। আবেদন যাচাইবাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কাফি
জাতীয়
ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩৭

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। একই সময়ে নতুন করে ৩৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম বিভাগে একজন করে মোট দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে ১০১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এতে বলা হয়, এ ছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, ঢাকা বিভাগে ৪১ জন, খুলনা বিভাগে ২৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৭ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে দেশে মোট ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়। বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন ১৪ জন। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন করে, খুলনা বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন এবং ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে ১ জন করে মোট ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় ও পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
জাতীয়
বন্যাদুর্গত এলাকায় নেই বিদ্যুৎ, বন্ধ মোবাইল নেটওয়ার্ক

ফেনীতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারও মানুষ। এ দুই উপজেলার কিছু এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি, মিটার ও ট্রান্সফরমার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় ৩১ হাজার ২০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়ন, ফুলগাজী সদরের কিসমত ঘনিয়ামোড়া, উত্তর শ্রীপুর, পূর্ব ঘনিয়ামোড়া, উত্তর নিলক্ষ্মী, পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া, দেড়পাড়া, নিলক্ষ্মী, গোসাইপুর, মন্তলা, গাবতলা, কহুমা, জগতপুর ও পরশুরাম উপজেলার ধনীকুন্ডা, শালধর, বেড়াবাড়িয়াসহ বেশকিছু এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পশ্চিম ঘনিয়ামোড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ না থাকলে বিকল্প কিছু দিয়ে চলা যায় কিন্তু ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ থাকে না। এ পরিস্থিতিতে দেশে-বিদেশে অবস্থান করা আত্মীয়স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে যান। গত বছরের বন্যায়ও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। তারা জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল টাওয়ারগুলো সচল রাখলে মানুষের খুবই উপকৃত হতো।
এ নিয়ে পরশুরাম পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. সোহেল আকতার জানান, এ উপজেলায় ৩৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংযোগ দেওয়া হবে। তবে বিদ্যুতের বিভিন্ন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সহসাই সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ফুলগাজী পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. হাবিবুর রহমান জানান, স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলার ৩০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৩৮ হাজার।
কাফি
জাতীয়
বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হতে চায় চীন

চীন সবসময় বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ওয়াং ই।
চীনা মন্ত্রী পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেশী এবং সহযোগী হতে চান তারা।
এছাড়া চীন বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনকে সমর্থন জানায় বলে জানান তিনি। এর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়নের পথ অন্বেষণেও পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি দুই দেশের পুরোনো ইতিহাস এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশকে আধুনিক এবং উন্নত করতে চীন কাজ করতে চায়।
জাতীয়
জুনে ৬৭১ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭১১ জন

জুনে দেশে ৬৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭১১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৯০২ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, রেলপথে ৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হন। সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৭৪৩টি দুর্ঘটনায় ৭৮০ জন নিহত এবং ১ হাজার ৯১৬ জন আহত হয়েছেন।
এই সময়ে ২২৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন নিহত ও ২১২ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৩৮ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহতের ১১.১৪ শতাংশ।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে–১৬০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭২ জন নিহত ও ৫৮৮ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে সিলেট বিভাগে–২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়েছেন।
সড়কে দুর্ঘটনায় ১১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৯ জন চালক, ১১০ জন পথচারী, ৪৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬০ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন শিক্ষক, ১০৫ জন নারী, ৬০ জন শিশু, ২ জন চিকিৎসক, ২ জন প্রকৌশলী এবং ১২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জন পুলিশ সদস্য, ৫ জন সেনাবাহিনী সদস্য, ২ জন চিকিৎসক, ২ জন প্রকৌশলী, ১১৫ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১০৪ জন পথচারী, ৮৪ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৫৬ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮ জন শিক্ষক ও ১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার মধ্যে ২৬.৩৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৪৮ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ১৬.৯৪ শতাংশ বাস, ১২.৭৩ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬.৭৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭.৭০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৯৮ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
৪১.২৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২৯.৬৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১.৩১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৬.৭০ শতাংশ বিবিধ কারণে, চাকায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ০.২৯ শতাংশ, এবং ০.৭৪ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩৯.৬৪ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩১.১৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৩.৫৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.০২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৮৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৭৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।