রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে ঈদের ছুটির পর কর্মস্থলমুখী মানুষের ভ্রমণে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে পুনরায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারীরা সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামিয়ে দেন। তারা লাল কাপড় টাঙিয়ে ট্রেন থামিয়ে স্টেশন চত্বরে অবস্থান নেন এবং ‘স্টেশন সংস্কার ও আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রাবিরতি চাই’— এমন দাবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেসসহ আরও কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে। এতে সারাদেশের সঙ্গে রাজশাহীর রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী যাত্রী নোমানুর রহমান বলেন, রাজশাহীতে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে পরিবার নিয়ে যশোর ফিরছিলাম। কিন্তু রাস্তায় আন্দোলনের কারণে শিশুসহ সবাইকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আন্দোলন সমর্থনযোগ্য নয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি— সিল্কসিটি, সাগরদাঁড়ি, বরেন্দ্র ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি এবং শতবর্ষী নন্দনগাছী রেলস্টেশনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার। জানা গেছে, ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত স্টেশনটিতে আগে ১২ জন জনবল থাকলেও বর্তমানে মাত্র একজন পোর্টার কর্মরত আছেন এবং স্টেশনের কার্যক্রম প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ।
এর আগে গত ১ মে একই দাবিতে চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলার মানুষ রেলপথ অবরোধ করেছিলেন। তখন রেল কর্তৃপক্ষ ১ জুনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় বুধবার আবারো অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।
আন্দোলনের সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম জনি বলেন, তিন উপজেলার মানুষের যাতায়াত ও ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র এই স্টেশনটি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় এখন পরিত্যক্ত অবস্থা। অতীতেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। এবারও আমাদের দাবির পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ সাহেবের মধ্যস্থতায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের ইশ্বরদী থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান, ঈদের পরে ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় থাকায় আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করি।
এ বিষয়ে রেলপথের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ খান বলেন, ঈদের ছুটির পর যাত্রাকালীন সময়ে এমন আন্দোলন আত্মঘাতী। আমরা ছুটি ছাড়াই সেবা দিচ্ছি। আন্দোলনের পরিবর্তে অফিস খুললে আলোচনা করে সমাধান করা যেতে পারে।এস
এমএস