খাগড়াছড়িতে টানা ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিংসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোর থেকে নিম্নচাপের প্রভাবে জেলায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়। পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় মাটিরাঙ্গা উপজেলার দুর্গম আলুটিলা এলাকায় একটি ছোট পাহাড় ধসে পড়ে। যদিও এতে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার। এর মধ্যে শুধু পৌর এলাকার ৩০টি স্থানে বসবাস করছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। বেআইনিভাবে পাহাড় কেটে কিংবা পাদদেশে ঘর তুলে এভাবে মূলত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজন বসবাস করছেন। বর্ষা এলেই বাড়ে তাঁদের আতঙ্ক।
পৌরসভার শালবন, কদমতলী, কুমিল্লাটিলা, মোল্লাপাড়া, কলাবাগান, নেন্সিবাজার, কৈবল্যপিঠ ও সবুজবাগ এলাকায় বহু পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও পাহাড়ের পাদদেশে মানুষজন বসবাস করছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীরা বলছেন, বিকল্প জায়গার অভাবে তারা বাধ্য হয়ে এসব স্থানে বসবাস করছেন। তাদের দাবি, সরকারিভাবে পাকা সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণ কিংবা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে তাঁরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, “বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে। ধস হলে জানমালের ক্ষতি হতে পারে। তাই আমরা মাইকিংয়ের মাধ্যমে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করছি।”
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রশাসক ও জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, “সতর্কতার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন, যাতে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন।”
কাফি