অর্থনীতি
আ.লীগের সময়ে পাচার ২০ বিলিয়ন অর্থের সন্ধান মিলেছে

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পাচার হওয়া ২০ বিলিয়ন অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এটা প্রাথমিক হিসাব। এখনো অধিকতর তদন্ত চলছে। দিন দিন এ অর্থের পরিমাণ বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, একজনই ৩৫০টি বাড়ি কিনেছেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে। এসব ঘটনা উদঘাটন করা গেছে। অর্থ পাচার প্রতিরোধে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, পাচারের অর্থ ফেরত আনতে হবে, এ ধরনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য নতুন। আমরা কেউ এ ধরনের কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। পাচারের অর্থ ফেরত আনার কাজ গতিশীল করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সে জন্য আইনে পরিবর্তন আনা হবে। ১১টি গ্রুপ নিয়ে যৌথ তদন্ত চলছে।
পাচারের অর্থ কবে নাগাদ ফেরত আসতে পারে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, পাচারের অর্থ ফেরত আনতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লেগে যাবে। ইতোমধ্যে বিদেশে একজনের সম্পদ জব্দ হয়েছে। সামনে আরও সম্পদ জব্দ হবে। আমাদের উদ্দেশ্য, পাচারকারীদের ওপর চাপ তৈরি করা, যাতে আদালতের বাইরে গিয়ে অর্থ উদ্ধার করা যায়। কাউকে জেলে নিয়ে হয়রানি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কারও ব্যবসা বন্ধ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা কারও ব্যবসা বন্ধ করিনি। যাদের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে, অন্য কারণে তা হয়েছে।
দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আগে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ছেড়ে দেওয়া হবে উল্লেখ করে আহসান মনসুর বলেন, এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই, কারণ তারা একটি শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন।
তিনি আমানতকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন টাকা উত্তোলন না করেন, কারণ সরকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় তাদের আমানত নিরাপদই থাকবে। একীভূতকরণের আগে ব্যাংক রেজল্যুশন ফান্ড গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তহবিল সংগ্রহ করবে।
ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে আর্থিকভাবে দুর্বল ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সভায় জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে বিএফআইইউতে মোট ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন ও কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রতিবেদন (এসটিআর/এসএআর) দাখিল হয়েছে; আগের বছরের তুলনায় যা প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া বিএফআইইউ গত অর্থবছরে ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। আইন প্রয়োগকারী, নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ মোট ১ হাজার ২২০টি তথ্য বিনিময়ও হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় যা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি।
বিএফআইইউর প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম বলেন, অর্থ পাচার ও হুন্ডি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও লেনদেন ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই প্রবণতা। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে কাজ চলছে। ১১টি গ্রুপ নিয়ে যৌথ তদন্ত চলছে। এ কাজে পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
সভায় বিএফআইইউর পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, অর্থ পাচার ধরা ও উদ্ধার করা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটা চলতেই থাকবে। গত বছরের জুলাই মাসের পর বিএফআইইউর কাজ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। সন্দেহজনক প্রতিবেদন অনেক বেড়েছে। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন পাঠানো চার গুণ বেড়েছে।

অর্থনীতি
যুক্তরাজ্য থেকে ৬২১ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য থেকে স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার। এই এলএনজি কিনতে ব্যয় হবে ৬২১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকা।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো (১৫–১৬ জুলাই ২০২৫ সময়ে ৩০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশিত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি।
পেট্রোবাংলা থেকে এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টে (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে।
দাখিল করা তিনটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে গ্রহণযোগ্য (রেসপনসিভ) হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের ভিত্তিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স টোটালএনর্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লি., ইউকে–এর কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৫.১৭ মার্কিন ডলার দরে মোট ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৬২১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকায় ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাফি
অর্থনীতি
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছি, এখনই জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নয়: অর্থ উপদেষ্টা

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আমরা আরও অপেক্ষা করবো বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আপাতত আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যুদ্ধটা। যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব বা প্রেসার পড়বে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে আমাদের দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যে কিছুটা বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি, সেগুলোতে প্রভাব ফেলেনি।
তিনি বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি; গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা বিবেচনায় নেব। আজ যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি, সেটা পুরোনো দামেই কোড করেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাব।
উপদেষ্টা বলেন, আপাতত আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যুদ্ধটা, যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব বা প্রেসার পড়বে।
আপাতত আমাদের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা কি নেই– এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, না, আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।
বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি বলতে আজ আমরা যে এলএনজি, সার আনার প্রস্তাব অনুমোদন দিলাম, সেটা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনব তখন হয়ত কিছুটা ইফেক্ট করবে।
যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়ত হয় তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করছেন কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিকল্প চিন্তা বলতে অবশ্যই জ্বালানি মন্ত্রণালয় করছে। যেহেতু আমরা এলএনজির ওপর নির্ভর করি বেশি। যুদ্ধে জ্বালানি শুধু না, সার, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়বে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ আসে, সেখানে প্রভাব পড়তে পারে। আমার মনে হয় যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।
বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে, অনেক দেশেই বেড়েছে– এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এখনো সেটাতে যাচ্ছি না, আমরা আরও অপেক্ষা করব।
অর্থনীতি
ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা

উচ্চ খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ব্যাংক খাত। আর এই খেলাপির কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রভিশন তথা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতিও। ফলে এখন ব্যাংক খাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যাংকগুলোকে ঋণের ওপর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সাধারণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হয়। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের মান অনুযায়ী ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতিও রাখতে হয়। যদি কোনো ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি থাকে তাহলে লভ্যাংশ দিতে পারবে না। ব্যাংক খাতের মোট প্রভিশন ঘাটতির কথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানালেও কোন কোন ব্যাংক এ ঘাটতিতে আছে তা জানায়নি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে ওই ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। ব্যাংক যদি প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা থাকে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যাংকের ওপর। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় আমানত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংক খাতের মোট প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিকে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৬৪ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। তারও আগের প্রান্তিকে সেপ্টেম্বর শেষে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চে প্রভিশন ঘাটতি ছিল মাত্র ২৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা, যা এক বছরে ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
খেলাপি ঋণ এখন শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সীমাবদ্ধ সমস্যা নয়, এটি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জন্যও বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে সামগ্রিকভাবে খেলাপি ঋণ দ্রুত বেড়ে চলেছে, যার প্রভাব পড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও। এ খাতে খেলাপির হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক খাতে বাড়ছে প্রভিশন ঘাটতিও।
তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বর শেষে ছিল ৫৭ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে ঘাটতি বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। তারও আগে, সেপ্টেম্বর শেষে এই ঘাটতি ছিল ৪০ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, মার্চ পর্যন্ত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে এই ঘাটতি ছিল ৪৮ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। মাত্র তিন মাসে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৫৮ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা প্রায় দ্বিগুণ। তারও আগে, সেপ্টেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা।
তবে, বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো প্রভিশন উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর প্রভিশন উদ্বৃত্ত ৪৩২ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত ২৪৮ কোটি টাকা।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনিয়ম করে বিতরণ করা বহু ঋণ এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সেই সরকারের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অনেক ঋণই অনিয়মিত হয়ে গেছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ শেষে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৪.১৩ শতাংশ—অর্থাৎ প্রায় চার ভাগের এক ভাগ ঋণ এখন খেলাপি। এসব খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংক খাতের সামগ্রিক আর্থিক ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে এবং স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে।
অর্থনীতি
ছয়দিনে যমুনা সেতুতে ১৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা টোল আদায়

যমুনা সেতু দিয়ে গত ছয়দিনে দুই লাখ ৪০ হাজার ১৫২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩০০ টাকা।
সোমবার (১৬ জুন) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ১০ জুন যমুনা সেতু দিয়ে ২৬ হাজার ৮৪৯ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৫০ টাকা। ১১ জুন ৩১ হাজার ৯৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭০০ টাকা। ১২ জুন ৩৮ হাজার ৫৩৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা।
১৩ জুন সেতু দিয়ে ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। ১৪ জুন ৫১ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা ও ১৫ জুন ৪১ হাজার ৯৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার ২০০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ‘সেতুর দুই পাশ দিয়ে ৯টি করে বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এর মধ্যে দুই পাশে দুটি করে বুথ দিয়ে আলাদাভাবে মোটরসাইকেলের জন্য পারাপার হচ্ছে।
অর্থনীতি
একদিনে যমুনা সেতুতে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা টোল আদায়

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ৪১ হাজার ৯৮৯টি যানবাহন পারাপার করেছে। এসব যানবাহন থেকে ৩ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
এদিকে ঈদের ১০ দিন পর সোমবারও (১৬ জুন) ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছে মানুষ। তবে আজ কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। গত দুদিন যমুনা সেতুর দুই পাশেই যানজট ও ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে ঢাকামুখী মানুষকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৪ জুন) রাত ১২টা থেকে রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ হাজার ৯৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৯ হাজার ১৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ৭০০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ২২ হাজার ৮০০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, যমুনা সেতুর দুই পাশ দিয়ে ৯টি করে মোট ১৮ বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এর মধ্যে দুইপাশেই ২টি করে বুথ দিয়ে আলাদাভাবে মোটরসাইকেলের জন্য পারাপার হচ্ছে।
কাফি