ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

দেশের শেয়ারবাজার আইসিইউতে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

পুঁজিবাজারের অংশীজনদের বাদ দিয়ে সংস্কার করা সম্ভব না উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, এই যে স্টক মার্কেটের জীর্ণদশা। এটা আসলেই মৃত প্রায়। ওটা আইসিইউর ভেতরে। ছিল ২৭ শতাংশ, কিন্তু এখনও জিডিপির ভ্যালু হিসেবে আছে ৯ শতাংশ। এটাকে চালু করার জন্য যে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, তাহলে স্টক মার্কেটে যারা অংশীদার রয়েছেন, তাদের সঙ্গে যদি আলোচনা না করে সিকিউরিটি অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন একা করতে যায়, তাহলে কোনোদিনই সম্ভব না।

তিনি আরও বলেন, মানুষের অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে ঠিক কাজও বেঠিক হয়ে যায় যদি আলাপ আলোচনা উন্মুক্ত না থাকে। আলাপ-আলোচনা করতে হবে এবং সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। কী পরিবর্তন করলাম একটা স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থেকে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির প্রশাসক (এফবিসিসিআই) মো. হাফিজুর রহমান, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে এতগুলো সংস্কারের কর্মসূচি হয়েছে, এত সংস্কারের পথরেখা চান, নির্বাচনের পথরেখা চায়, বিচারের পথরেখা চায়। আমি জিজ্ঞেস করি, আমার অর্থনীতির পথরেখা কোথায়? তিনি আরও বলেন, সরকার বদল হলেও প্রক্রিয়া বদল হলো না। কিন্তু অর্থনীতির পরিকল্পনা কোথায়?

ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, ড. মঈন খান বললেন, আলাপ-আলোচনা কতটুকু সীমিতভাবে হয়েছে। আমি তার দুটি উদাহরণ আপনাদের বলি। এখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় এখানে বসা আছেন এবং কমিটির প্রধান আছেন, উনারা কাজ করেছেন। আমার শ্বেতপত্রেও বলা আছে, এটাকে দুই ভাগ করা হোক। যারা কর আহরণ করে এবং যারা কর নীতি করে দুজনকে একসঙ্গে থাকা উচিত না। এখানে স্বার্থের সংঘাত হবে। একটা ঠিক কাজ আলাপ আলোচনা ব্যতিরেকে যে কমিটি রিকমান্ড করেছিল তা পরিপালন না করে, যদি আপনি বাস্তবায়ন করতে চান, আপনার যে দুঃখজনক পরিণতি হয়েছে, তা-ই হওয়ার কথা। ঠিক কাজও যদি সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে করেন, তাহলে এমন পরিণতি হবে।

সিপিডির এই সম্মাননীয় ফেলো বলেন, আমার দ্বিতীয় বক্তব্য আপনাদের কাছে, ড. আনিুজ্জামান আছে এখানে, সেটা হলো অর্ন্তবর্তীকালীন বাজেটের বিষয়ে বলেছেন। অর্ন্তবর্তীকালীন বাজেট কী? যে বাজেট নিয়ে কাজ করছেন সেটা পতিত সরকারের বাজেট। পতিত সরকারের বাজেট নিয়ে আপনি প্রথমে প্রাক্কলন করেছেন জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের দিকে এসে। কিন্তু কাঠামোগত কী উন্নয়ন করলেন? ওই প্রাক্কলনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ধারণা ছাড় দেবেন না বলতেছেন। এখানে কাকে ছাড় দিচ্ছেন, কাকে ভর্তুকিতে রাখছেন? ইন্টারেসট রেট কোথায় দিচ্ছেন? কে বলতে পারবে আপনি কী স্বচ্ছতা দিয়েছেন আমাকে। ওই স্বৈরাচারী সরকারের আমলে যে স্বচ্ছতার অভাব দেখেছি, সবাইকে আমাদের থামিয়ে দিয়েছেন। এখনও কাজটা আপনারা একই রকম করলেন। আপনারা কোনো স্বচ্ছতা দিলেন না।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ওই পতিত সরকারের যে এডিপি ছিল, ওই এডিপি থেকে কেমন করে কমানো হলো। ওই মেগা প্রজেক্টগুলো যে অতিমূল্যায়িত ছিল, কোথায় টাকা কমিয়েছেন। আমি তো আবার মেগা প্রজেক্টের অল ইকুশেয়ন দেখতে পারছি। আপনি ওখানে কীভাবে সামাজিক সংস্কারের অংশ হিসেবে কীভাবে নতুনভাবে স্থান দিলেন, কোনো নীতিমালা হলো না। এখন সেই আগের এডিপি এখন চলছে। আমি সেটার ভিত্তিতে কাজ করছি।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার