জাতীয়
সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে: সেনা সদর

সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা।
করিডরের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এবং এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কী ভাবছে– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করিডরের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটা আমাদের দেশ, আমাদের সবার দেশ। এই দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আমরা সবাই জড়িত। এ দেশকে ভালো রাখতে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। সুতরাং আমি মনে করি না যে এই বিষয়টা এমন একটি পর্যায়ে গেছে, যেভাবে বিষয়টা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মো. নাজিম-উল-দৌলা বলেন, সরকার ও সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করছে। আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের সঙ্গে কাজ করছি এবং সরকারের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করছি। সরকার ও সেনাবাহিনী খুব সুন্দরভাবে একে অপরের সহযোগিতায় কাজ করছে। করিডরের সঙ্গে বর্ডারে আরসার মুভমেন্টের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। দুইটা বিষয় আলাদা। সরকার ও সেনাবাহিনী ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করছে, এরকম যেন আমরা না ভাবি। সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে, ভবিষ্যতেও আমরা আরও সুন্দরভাবে কাজ করে যাব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
চট্টগ্রামের একটি কারখানায় সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের পোশাক পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক বলেন, কেএনএফ মূলত বম কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন। পোশাক পাওয়ার সংবাদটি একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ। সংগঠনটির অস্ত্রের ব্যবহার আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখছি। তাদের আক্রমণে আমাদের কয়েকজন সেনাসদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন এবং আহত হয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে নিশ্চয়ই এটা ভালো কোনো খবর নয়।
তিনি বলেন, ৩০ হাজার ইউনিফর্ম পাওয়ার ছবি দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, এটার আসলে ব্যাপারটা কি এ বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। এ পোশাক কাদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, সেটা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এটা নিয়ে কাজ চলছে। এ সংগঠনের সঙ্গে অন্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কিন্তু বম কমিউনিটির জনসংখ্যা মাত্র ১২ হাজার। সুতরাং এই ৩০ হাজার ইউনিফর্ম কেএনএফের জন্য ছিল কি না সেটা খুঁজে দেখার সুযোগ আছে। এ বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। বিষয়টি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিষয়টিকে আমরা হালকাভাবে নিইনি, নিশ্চিত করে বলতে পারি। এ ব্যাপারে যতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আমাদের দায়িত্বের মধ্যে যেটা পড়ে, সেটা আমরা করব।
বাংলাদেশ একটা ছায়া যুদ্ধের মধ্যে আছে, সেটা বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হচ্ছে। আরসা বাংলাদেশের লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে ঢুকে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক সময় বিভিন্ন মাধ্যমে খবর আসছে তাদের কাছে ভারি ভারি অস্ত্র আছে, তাদের কাছে এই অস্ত্র কোথায় থেকে আসছে। এসব বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আসলে বর্ডার কি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে নাকি আমরা বর্ডার কম্প্রোমাইজ করেছি– এমন প্রশ্নের জবাবে মো. নাজিম-উল-দৌলা বলেন, আমি যদি এক লাইনে উত্তর দিতে চাই, অবশ্যই আমরা বর্ডার কম্প্রোমাইজ করিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গায়ে বিন্দুমাত্র শক্তি থাকবে, আমরা কখনোই বর্ডার কম্প্রোমাইজ করব না। এটা আমাদের দেশ আর দেশকে আমরা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করব। এটা আপনার দেশ, এটা আমাদের দেশ। কোনো একটা সম্প্রদায়ের মাধ্যমে এ দেশের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হতে পারে, সেটা কখনোই হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বর্ডার অত্যন্ত জটিল একটি পরিস্থিতির মুখে আছে। মিয়ানমারের সরকারের অস্তিত্ব বিলীনের মুখে। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যটিকে প্রায় দখল করে নিয়েছে। তাদের দখলে রাখাইন রাজ্যের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ রয়েছে। আরাকান আর্মি কোনো অথরাইজ সংগঠন নয়। এ জায়গাটাতে না আছে কোনো সরকারের অস্তিত্ব, না আছে আরাকান আর্মিকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বর্ডারের পরিস্থিতি যেকোনো সময়ের তুলনায় সংবেদনশীল। সেক্ষেত্রে এ সময়ে ওই এলাকায় কিছু সশস্ত্র গ্রুপের মুভমেন্ট করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তার মানে এই নয় যে এটাকে আমরা স্বীকৃতি দেব বা দেখেও না দেখার ভান করব। এ ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতিতে এ ধরনের মুভমেন্ট হতে পারে কিন্তু আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বিজিবি প্রাথমিকভাবে ডেফিনেটলি সাপোর্টেড বাই আর্মি, আমরা এই বর্ডারে প্রচণ্ডভাবে নজরদারি রাখছি। এখানে যেন সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হতে না পারে, এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল আছি। তবে অবশ্যই এই মুভমেন্টটি উদ্বেগের বিষয় এবং কাঙ্ক্ষিত নয়।
কাফি

জাতীয়
টিউলিপ সিদ্দিককে ফের দুদকে তলব

অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাবেক সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাকে আগামী ২২ জুন দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে টিউলিপের ঢাকার পাঁচটি ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের সই করা এসব চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ পারিতোষিক হিসাবে ইস্টার্ন হাউজিং থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে রেজিস্ট্রি মূলে দুটি ফ্ল্যাট দখল নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ২২ জুন দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য আপনাকে পুনরায় সবিনয় অনুরোধ করা হলো। নির্ধারিত সময়ে আপনি উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে এ বিষয়ে আপনার কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।
এর আগে গত ৮ মে টিউলিপকে আরও একবার তলব করে সংস্থাটি। গত ১৪ মে দুদকে তার হাজির হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে সেসময় তিনি হাজির হননি।
দুদক সূত্রে জানা যায়, গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের বিরোধপূর্ণ জমিতে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন থেকে নিজ নামে একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে দখলে নিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা। অর্থ পরিশোধ না করে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের কাছ থেকে ফ্ল্যাট নেওয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন বলে জানায় দুদক সূত্র।
এর আগে পূর্বাচল নতুন শহরে ১০ কাঠা করে নিজের মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দের অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় তাকে ব্রিটিশ মন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জাতীয়
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত নেপাল থেকে আসা ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। দেশটি থেকে আসা বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। আগামী পাঁচ মাস ভারত হয়ে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে।
রবিবার (১৫ জুন) রাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম বিষয়ট নিশ্চিত করেছেন।
পিডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, নেপাল থেকে শনিবার (১৪ জুন) দিনগত রাত ১২টার পর থেকে আমরা ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত আমরা বিদ্যুৎ পাবো। নেপালে এই সময়টা বর্ষার, এজন্য বর্ষা মৌসুমে শুধু বিদ্যুৎ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর নেপাল থেকে ভারত হয়ে বিদ্যুৎ আমদানি চূড়ান্ত করতে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম লিমিটেড একটি ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিতে ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে। ভারতীয় ট্রান্সমিশন চার্জসহ নেপাল থেকে দেশে আসা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে প্রায় ৭ টাকা।
জাতীয়
ইরানে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু

তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। + ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।
জাতীয়
ভোটের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের যে সময়েই নির্বাচন হোক না কেন প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। তফসিল ঘোষণার সময় ভোটার তালিকা তৈরি থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যেদিন ইলেকশন ডেট হয় তার মাস দুয়েক আগে তফসিল হয়। মানে ৫০-৬০ দিন আগে হবে। তবে ভোটের আট-দশ মাস আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এ মুহূর্তে ঘোষণা সম্ভব নয়। ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ধারণা পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
রোববার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। সামনের কাজগুলোর বিষয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সংশোধন করা হবে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত প্রায়। দল নিবন্ধন ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের মতো বড় কাজ রয়েছে।
তফসিল কবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতদিন তো সরকারই আলোচনা করেছে, আমরা করিনি। উনাদের পজিশনটা আমাদের বুঝতে হবে। বোঝার পরে যেদিন তারিখ ঠিক হবে, অ্যারাউন্ড দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা হবে। ঐতিহাসিকভাবে তা-ই, ৫৫ থেকে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করবো। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে ধারণা পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্যে এপ্রিলের প্রথমার্ধে যে কোনোদিন ভোটের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা এবং লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণার মধ্যে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি।
ফেব্রুয়ারির ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা এলেও অফিসিয়ালি কোনো কিছু না পাওয়ায় মন্তব্য করতে নারাজ তিনি। এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে হোক- জাতীয় নির্বাচন যখনই হোক, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে আমাদের বলা হয়েছিল ডিসেম্বর থেকে জুন, আমরা সে টাইম স্পেন মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি ও এগিয়ে যাচ্ছি।’
এপ্রিলের ভোটের বিষয়ে জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ হলেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে ‘অফিসিয়ালি’ কোনো কিছু পায়নি ইসি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা এখনো প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের যখন কথাবার্তা হবে, কি ধরনের চিন্তাভাবনা করছে, তখন সিদ্ধান্তে আসতে পারবো। তারিখ নিয়ে, অমুক দিন অমুক তারিখ ইলেকশন হবে এ মুহূর্তে আমি এমন ঘোষণা দিতে পারবো না।’
সরকারের কাছ থেকে যদি ধারণা পাই তাহলে সে অনুযায়ী ইলেকশন ডেলিভার করার জন্য প্রস্তুত আছি এবং প্রস্তুতি নিচ্ছি-যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বললেও সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগেও ভোট হতে পারে বলে মত দেন।
লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
এখন আবার নতুন ডাইমেনশন এসেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, লন্ডনে যে ঘোষণাটা এসেছে অন্যদের মতো মিডিয়া থেকে যেটুকু জানেছি, এর বাইরে কিছু নেই। এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না। ভেতরে কি আলাপ হয়েছে। শুধু যৌথ বিবৃতি যেটা দিয়েছে সেটা তো আন-সাইনড; এটাই বা কতটুকু জেনুইন তাও তো জানি না। কারো স্বাক্ষর থাকলে বুঝতাম এটা সরকারের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন। তাহলে বুঝতাম এটা অফিসিয়াল ডকুমেন্ট।
‘অফিসিয়ালি কোনো কিছু না এলে কিছু করা যাবে না। ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে, আলাপের পেছনেও আলাপ থাকে। ঘোষণা একটা হয়েছে, নিশ্চয়ই ভেতরে অনেক আলাপ হয়েছে।…সেগুলোও আমাদের জানতে হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।
নিরাপত্তা উপদেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা একটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ইসি হয়তো একটা তারিখ ঘোষণা করবেন। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
বিশেষ ধরনের সরকার, বিশেষ ধরনের পরিস্থিতি, একদিকে সরকার বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে; সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করছে। বিচারটা বিচারকের হাতে ছেড়ে দিতে হবে, তবে ত্বরান্বিত করার বিষয় রয়েছে, এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সংস্কারের বিষয় রয়েছে। এসব নিয়ে সরকারই আলোচনা করছে। আমাদের ধারণা, সরকারের পক্ষ থেকে একটা তারিখ ঘোষণা হবে। কিন্তু লন্ডন সফরের পরে দায়-দায়িত্ব কিছুটা আমাদের ওপরই আসছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটু কথাবার্তা না হলে, কোনো নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘(ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন) এটা এখনো আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন আরপিও অনুযায়ী ইসি গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে। ছয় মাস/আট মাস আগে ওই তারিখে নির্বাচন হবে- এটা বলার বিধান আরপিও তে নেই। তফসিল ঘোষণার বিধান বলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঐতিহাসিক নির্বাচন উপহার দেওয়ার কথা বলেছেন। এ নির্বাচনটা করবে ইসি। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনটি করতে চাচ্ছেন।
‘আমাদের বুঝতে হবে, পরিস্থিতিটা বিশেষ পরিস্থিতি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। আমি তো একটা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট দেখেছি, রমজানের আগেও ইলেকশন হতে পারে ‘যদি’। এটাকে ফরমাল বা অফিসিয়াল ওয়েতে ভাবতে পারছি না।’
সিইসি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো কথা হয়নি। আমরা এখন আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। যখনই হয় যেন আমরা নির্বাচনটা ডেলিভার করতে পারি। আমি এখন আমার প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। এখন আমাদের ধ্যানধারণা শয়নে-স্বপনে নিজেদের প্রস্তুতি।’
‘সিইসি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তারিখ ঘোষণা করেন। দশ মাস আগে তারিখ ঘোষণা করে এমন দেখেছেন কখনো? আমরা এখনো কোনো টার্গেট ফিক্সড করিনি। সরকারের সঙ্গে যখন এক্সচেঞ্জ অব আইডিয়া হবে, তারিখ নিয়ে যত আলাপ-আলোচনা সরকারই করেছে। আমরা তো করিনি। সরকারের পরিবর্তিত কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন কি না এমন প্রশ্নে সিইসি জানান, প্রয়োজন হলে দেখা করতে পারেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। সবকিছু বৈঠক করে হবে এমন নয়, বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমেও হয়ে থাকে। সরকারের সহযোগিতা লাগবে। সরকার আলোচনা করছে, আলোচনা অগ্রগতি, বেসিস কি, চিন্তাভাবনা আমাদের বুঝতে হবে। ভিডিও দেখে তো সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। আলোচনাটা সব সময় ওখানে করছে। ভেতরের অন্দরমহলের বিষয়টি বুঝতে হবে।’
ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কয়েকটি দল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া, আল্লাহ তাদের আস্থায় নিয়ে আসুক। আমার বিশ্বাস, আমাদের দলগুলো দেশের মঙ্গল চায়। রাজনৈতিকভাবে অনেক কথা বলতে হয়, আমি এটাকে রাজনৈতিকভাবে দেখি। রাজনৈতিক সচেতন থাকবেন, দলীয় রাজনীতিতে জড়াবেন না- এমন নির্দেশনা কর্মকর্তাদের দিয়েছি।’
ইসির বিরুদ্ধে বললে একদম আহত হন না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সমালোচনাকে স্বাগত জানাই।’
একমত্য কমিশনের লিখিত কিছু না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
নির্বাচনে কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বিষয়টি বারবার স্মরণ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরেন সিইসি। আমরা কারো হুকুমে, কারো নির্দেশনায়, কারো পরিচালনায় আমরা কাজ করি না। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দলীয় স্বার্থরক্ষার জন্যে কাজ না করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
‘অতীতে যা হয়েছে, কেউ যদি মনে করে কেন্দ্র দখল, বাক্স লুট করবে তা দিবাস্বপ্ন। সে সুযোগ এবার আর পাবে না, এটা করতে দেবো না ইনশাহ আল্লাহ। সবাই সুন্দর নির্বাচন চায়।’
জাতীয়
নেপাল থেকে আসছে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে নেপাল। গতকাল শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে দেশটি।
আজ (রবিবার) নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া ত্রিপক্ষীক চুক্তির আওতায় নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হয়েছে। ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে শনিবার রাত থেকে নেপাল বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। ভারতের মুজাফফরপুর-বাহারামপুর হয়ে বাংলাদেশের ভেড়ামারা গ্রিড দিয়ে এই বিদ্যুৎ আসছে।
গত বছরের ৩ অক্টোবর নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া ত্রিপক্ষীক চুক্তি অনুযায়ী নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়।
চুক্তি অনুসারে, ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য ভারতের ৪০০-কেভি ট্রান্সমিশন গ্রিড ব্যবহার করে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে নেপাল।