বাজেটে পুঁজিবাজারে করছাড় আসতে পারে

পুঁজিবাজারে চলছে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি মন্দাভাব। দিশেহারা স্টেইকহোল্ডার বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। এমন বাস্তবতায় আগামী অর্থবছরে আসতে পার করছাড়। একই সাথে বাড়তে পারে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা। বর্তমানে বার্ষিক আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত আয়সীমা রয়েছে। এই সীমা আরও ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হতে পারে।

সোমবার (২০ মে) বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এই বৈঠক হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বাজেটের শুল্ক-করের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া নতুন নতুন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে শর্ত যেমন সহজ করা হবে, তেমনি কর ছাড়ও দেওয়া হতে পারে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

এবিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, আগামী বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কর দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করা। অনলাইনে রিটার্ন জমাকে আরও উৎসাহিত করা হবে। তিনি বলেন, আগামী বাজেট হবে করবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকার নীতিগতভাবে করমুক্ত আয়সীমা বাড়াতে একমত হয়েছে। এ জন্য এনবিআরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম করের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন, পৌর এলাকা, গ্রাম এলাকা নির্বিশেষে ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার করার বিষয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়। বর্তমানে ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

বর্তমানে সারা দেশে ১ কোটি ১১ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। এর মধ্যে বছরে গড়ে ৪০ লাখের মতো টিআইএনধারী রিটার্ন দেন। এনবিআরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আজকের বৈঠকে কর ভিত্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কর দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারণ করার জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। আগামী বাজেটে কোম্পানির ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।

আরও জানা গেছে, বর্তমানে বছরে তিন কোটি টাকার বেশি টার্নওভার হয়, এমন প্রতিষ্ঠানকে লাভ-লোকসান নির্বিশেষে দশমিক ৬ শতাংশ কর দিতে হয়। এটি বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হতে পারে।

এ ছাড়া ভ্যাটের ক্ষেত্রে ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়তে পারে। বর্তমানে এসব পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। এই হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের মূল্য সংযোজন অনুসারে ভ্যাটের হার বাড়তে পারে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার