ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

হঠাৎ অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে তর্কে জড়ালেন রাশেদ মাকসুদ

বিএসইসি চেয়ারম্যান হঠাৎ কেন এবং কি কারণে বৈঠক ডেকেছেন এতে অংশগ্রহণ করা অনেকই জানেন না। হঠাৎ সকাল বেলা মুঠোফোনের মাধ্যমে দাওয়াত দেয়া হয় বলে অর্থসংবাদকে জানিয়েছে বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক ব্যক্তি। শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে দেশের পুঁজিবাজারের অংশীজনদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ কমিশনার ও নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশগ্রহণ করা একাধিক ব্যক্তি অর্থসংবাদকে বলেন, কোন প্রস্তুতি ছাড়া হঠাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা যে বৈঠক ডেকেছে সেখানে খুবই অপেশাদার আচরণ করেছেন। রাশেদ মাকসুদ সভা ডেকে সেখানে কে কোথায় কী মন্তব্য করেছে, কে বাজার নিয়ে পত্রিকায় নেগেটিভ বক্তব্য দিয়েছে এইসব বিষয়ে চার্চ (জবাবদিহি) করেছেন। ওনাকে নিয়ে কে কোথায় কি বলেছেন সেটা সবার সামনে বৈঠকে তুলেছেন! নিয়ন্ত্রক সংস্থার ইতিহাসে এমন অপেশাদার আচরণ দেখিনি। বৈঠকে ডিবিএ, বিএমবিএ এর প্রতিনিধিদের সাথে রাশেদ মাকসুদের উত্তপ্ত মতপার্থক্য হয়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন সবাই বাজার নিয়ে নেগেটিভ বলে, তাই বাজার খারাপ যাচ্ছে। এজন্য এখন পজেটিভ বলতে হবে।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, যা বলার বৈঠকে বলেছি, পরামর্শ দিয়েছি। যতটুকু জানি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানাবে বিএসইসি। বৈঠকের বিষয়ে আগে জানা ছিলনা, সকালে হঠাৎ জানানো হয়েছে। বৈঠকে গিয়ে দেখি ডিএসই, বিএমবিএ, আইসিবি সহ অনেকেই ছিল।

তবে বিএসইসি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে হওয়া সভা ও তার নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করা, পুঁজিবাজারে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয়ের উপর আরোপিত কর মওকুফ করা, পরিকল্পনা অনুসরণ করে নেগেটিভ ইক্যুইটির উত্তোরণ ও স্থায়ী সমাধান করা, বিও হিসাবে মেইনটেইন্যান্স ফি মওকুফ করা, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স মওকুফ করা, ব্রোকারদের টার্নওভারের উপর প্রদত্ত অগ্রিম কর (AIT) হ্রাস করা, দেশের ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন বৃহৎ দেশীয় কোম্পানি, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি কিংবা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ, সরকারী সিকিউরিটিজ (সংক্ষেপে G-Sec বা Government Securities) এর নিলাম (auction) পুঁজিবাজারের এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে আনয়ন, সিকিউরিটিজ হাউজে থাকা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয়ে গঠনমূলক এবং সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের হতে প্রাপ্ত আয়ের অর্থের ব্যবহার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বিনিয়োগকারীদের কল্যাণের স্বার্থে মিউচ্যুয়াল ফান্ডসমূহের চলতি অর্থবছরের অর্জিত আয়ের ২০ শতাংশ প্রভিশনিং করে বাকী ৮০ শতাংশ ইউনিটহোল্ডাদের মধ্যে ডিভিডেন্ড হিসেবে বিতরণ করার প্রস্তাবনা পেশ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সভায় বিএসইসি’র সাথে দেশের পুঁজিবাজারের অংশীজনদের সমন্বয় ও সংযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার একটি সমন্বয় সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় বিএসইসি’র কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ এবং নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ ও পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএ‘র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম, ডিএসই’র পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ডিএসই’র পরিচালক শাকিল রিজভী, ডিএসই’র পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাত্বিক আহমেদ শাহ, ডিবিএ‘র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন, বিএমবিএ এর প্রেসিডেন্ট মাজেদা খাতুন, আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, আইসিবি’র মহাব্যবস্থাপক জনাব মাহমুদা আক্তারসহ আরো অনেকে সভায় পুঁজিবাজারের অংশীজন হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার