রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল ও টেকসই সংস্কারের দাবিতে রবিবারও (১৮ মে) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর আওতাধীন ট্যাক্স, ভ্যাট ও কাস্টমস দপ্তরগুলোতে কলম বিরতি পালিত হবে।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে আয়োজিত কর্মসূচি শেষে এ তথ্য জানিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টার কর্মবিরতি শেষে তারা রবিবার আরো জোরালোভাবে ছয় ঘণ্টার কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়।
রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি।
তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম এবং আসন্ন জাতীয় বাজেট প্রণয়ন— এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম আগের মতোই কলম বিরতির আওতার বাইরে থাকবে।
ঐক্য পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব প্রশাসনকে দুই ভাগে ভাগ করে—রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ চালুর লক্ষ্যে যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, সেটি বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি হাজারো কর্মকর্তার মতামত উপেক্ষা করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংস্কার কমিটির সুপারিশও গোপন রাখা হয়েছে, যা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক সংস্কারের পরিপন্থী।
শনিবারের কর্মসূচিতে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও কোনো দাপ্তরিক কার্যক্রম হয়নি। তবে অফিস কার্যক্রম স্থবির হলেও আন্দোলনকারীরা করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন, যৌক্তিক দাবি পূরণ হলে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পেছানো কাজ দ্রুত সম্পন্ন করবেন।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে বহিরাগতদের জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ সময় তারা বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের অনির্বাচিত ও কার্যকরিহীন কমিটিকে ‘প্রতিনিধিত্বহীন’ বলে অভিহিত করেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই কমিটিগুলোর নামে কোনো বক্তব্য বা কার্যক্রম শুধু ব্যক্তিগত বিবেচিত হবে এবং সংশ্লিষ্টরা দায় বহন করবেন।
এদিকে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকটের সমাধান চান তারা। প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে সরকার শিগগিরই আলোচনায় বসবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।
তাদের দাবি, আন্দোলনের দরজা এখনো খোলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করে, যার ফলে প্রায় পাঁচ দশকের পুরনো এনবিআর বিলুপ্ত হয়। এরপর থেকেই রাজস্ব প্রশাসনের তিন শাখার কর্মকর্তারা ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন।