দীর্ঘ ২০ বছর পর দেশের পুঁজিবাজারে শনিবার লেনদেন হয়েছে। পতনের বৃত্তে আটকে থাকা পুঁজিবাজারে এমন ঐতিহাসিক দিনেও লেনদেন ঠেকেছে তলানিতে। সপ্তাহের প্রথম এই কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বাড়লেও টাকা অংকে লেনদেনের পরিমাণ গত ৯ মাস বা ৪০ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ডিএসইর বাজার পর্যালোচনা করে জানা গেছে, এর আগে গত বছরের (৪ আগস্ট) ডিএসইর লেনদেন ছিলো সর্বনিম্ন। এদিন লেনদেন হয়েছিলো ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আর আজ লেনদেন হয়েছে ২৬২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যা ৯ মাস ১৩ দিন অথবা ৪০ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে বেহাল অবস্থায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সূচকের টানা দরপতনে অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে পুঁজিবাজারে চরম আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই কমছে সূচক ও শেয়ারের দাম; নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ফলে দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে।
শনিবার (১৭ মে) ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৩৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮২০ পয়েন্টে।
এছাড়া, ডিএসইর অপর সূচক ‘ডিএসইএস’ ১৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে ১০৫২ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ১৮ দশমিক ০৮ পয়েন্ট কমে ১৭৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করেছে।
আজ ডিএসইতে ২৬২ কোটি ৮৬ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিলো ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৭টি কোম্পানির, বিপরীতে ৭৯ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর ছিলো অপরিবর্তিত।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমানে বাজারে প্রতিনিয়ত যেসব শেয়ার বিক্রি হচ্ছে, তার বড় অংশই মার্জিন ঋণের দায়ে বাধ্যতামূলক বিক্রি। এতে করে বাজারের ওপর চাপ বাড়ছে, দরপতন বাড়ছে, আর পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে সংকট দেখা দিয়েছে তাতে কেবল সূচক আর লেনদেনই নয়, আস্থা ও বিশ্বাসও নষ্ট হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
কাফি