জাতীয়
নিয়ম মেনে অবৈধ ভারতীয়দের ফেরত পাঠাবে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবৈধভাবে যেসব ভারতীয় বাংলাদেশে আছেন তাদের ভারতের মতো পুশব্যাক করা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অবৈধ ভারতীয়দের প্রোপার চ্যানেলে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার (১৭ মে) সুন্দরবনে বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সুন্দরবনের জল সীমানায় বিজিবির যশোর রিজিয়নের আওতাধীন রিভারাইন বর্ডার গার্ড (আরবিজি) কোম্পানির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় জলসীমান্ত রক্ষায় কাজ করবে বিজিবির ভাসমান বিওপি।
ভারত সুন্দরবনের জলসীমাসহ বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত মান্দারবারি সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন করেছিল, সেখানে আমি পরিদর্শন করেছি। ভারতকে আমরা জানিয়েছি- আমাদের কোনো বাংলাদেশি যদি তাদের (ভারতে) ওখানে থেকে থাকে তাহলে প্রোপার চ্যানেলে পাঠান। যেমন ভারতের যারা বাংলাদেশে আছে তাদের আমরাও প্রোপার চ্যানেলে পাঠাই। আমরা কাউকে পুশইন করি না।
তিনি বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত পুশইনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিজিবির সঙ্গে আনসার এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধে ভারত পুশইন করতে পারেনি। আপনারা সবাই যদি সহযোগিতা করেন তাহলে ভারত পুশইন করতে পারবে না। বিজিবির সঙ্গে জনগণ এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের সহযোগিতা দরকার।
পুশইন ঠেকাতে প্রতিবাদমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডিপ্লোমেটিক সল্যুশনের (কূটনৈতিক সমাধান) জন্য এরই মধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের জন্য এ বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমার কাছে এটা (পুশইন) ওরকম উসকানি মনে হচ্ছে না। যেহেতু এর আগেও উনারা (ভারত) পুশইন করেছিল অনেক আগে; যে সময় পুশইন করেছিল সে সময় আমি বিজিবির ডিজি ছিলাম।
হঠাৎ এই সময় আবার কেন ভারত পুশইন করছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কিছুদিন আগে শুনেছেন গুজরাটে বাঙালি কলোনির মতো ছিল (বাঙালি বস্তি)। গুজরাটে সেটা ভেঙে দেওয়ার পরেই এটা (পুশইন) শুরু হয়েছে।
ইউএনএসিআরের কার্ড হোল্ডারদেও পুশইন করা হয়েছে কেন জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, এটা আমরা অলরেডি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছি। এর ভেতর কিছু রোহিঙ্গা চলে আসে। যেসব রোহিঙ্গা আমাদের দেশে ছিল তাদেরও পাঠিয়েছে, আবার ভারতীয় রোহিঙ্গাদেরও পাঠিয়ে দিচ্ছে। এজন্য আমরা এটার প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছি।
বাংলাদেশে অবৈধ ভারতীয় আছে কি না, যাদের পুশব্যাক করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ ভারতীয় একেবারেই নাই আমি বলবো না। আপনাদের অনুরোধ করবো যদি থাকে জানান, আমরাও যেন প্রোপার ওয়েতে (নিয়ম মাফিক) পাঠাতে পারি।
ভারত যেহেতু পুশইন করছে বাংলাদেশও ভবিষ্যতে পুশব্যাক করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমার দেশের নাগরিক হলে পুশব্যাক করার কোনো অধিকার নেই। অবৈধভাবে ভারতীয় যারা বাংলাদেশে আছে তাদেরকে ভারতের মতো পুশব্যাক করবো না, তাদের প্রোপার চ্যানেলে পাঠাবো। অবৈধভাবে পাঠানো আইনসিদ্ধ নয়।
অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার, খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, আরবিজি কোম্পানির অধিনায়ক, বিজিবির অন্যান্য পদবীর কর্মকর্তা ও সৈনিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়
সারাদেশে বিশেষ অভিযান গ্রেফতার ১ হাজার ৭৮২ জন

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও এক হাজার ২০৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৫৭৯ জন। একদিনে মোট এক হাজার ৭৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এসব তথ্য জানান।
এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে এক হাজার ৭৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এক হাজার ২০৩ জন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি রয়েছে।
এছাড়া অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ৯ রাউন্ড, একনলা বন্দুক দুটি, কার্তুজ ৪৬ রাউন্ড, রামদা চারটি, ধারালো চাকু তিনটি, লোহা কাটার কেচি একটি, শাবল দুটি, এলজি ছয়টি, চাপাতি দুটি, ছুরি চারটি, তরবারি সাতটি, হাসুয়া দুটি, ড্রেগার একটি, লোহার ও কাঠের তৈরি থ্রিনট থ্রি রাইফেল বাট একটি।
বিশেষ এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদরদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
জাতীয়
ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে: প্রেস উইং

অন্তর্বর্তী সরকারকে লক্ষ্য করে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে এসব করতে ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে, যা মূলত অন্তর্বর্তী সরকার বিরোধী প্রচারণা এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে করা হচ্ছে’।
প্রেস উইং জানায়, গভীর অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অ্যাকাউন্টটিতে পুরোপুরি মিথ্যা ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র সচিব রীম আল-হাশিমির চুরি হওয়া ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে মিথ্যা পরিচয়ের মাধ্যমে এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রোফাইল হোল্ডার এমনভাবে করা হয়েছে যা দেখে অনুমান হতে পারে উচ্চ পর্যায়ের একজন আন্তর্জাতিক প্রচারক আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন করছে।
প্রোফাইলের মেটাডেটা বিশ্লেষণে জানা যায়, এটি গতবছরের ২৪ নভেম্বর তৈরি করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। মাত্র সাত মাসে এই অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার হয়েছে।
প্রোফাইলের ছবি, ভিডিও ও বর্ণনা সাধারণ ব্যবহারকারীদের এ ধারণা দিতে পারে যে, একজন প্রভাবশালী নারী নেতা, যিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছেন।
এই ফেসবুক পোস্টে, ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ দাবি করেছে, সুইজারল্যান্ডের বিচারালয় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩৩৪ জনকে ক্ষমা করে দিয়েছে। রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টগুলো একই রায় দিয়েছে।
তার আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বা করতে যাচ্ছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাতটি নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একটি চিঠি পাঠাচ্ছে। তিনি এই মিথ্যাচারও করেছেন যে, জি-সেভেন সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছে।
১৭ জুনের একটি পোস্টে দাবি করেছেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল করেছে।
১৭ জুনের আরেক পোস্টে তিনি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ যাতে স্বাধীনভাবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। তবে প্রেস উইং দাবি করেছে ‘এসব দাবি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা’।
প্রেস উইং তার বিবৃতিতে আরও বলেছে, অপপ্রচার ছড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই ধরনের সংবাদের কোনো সত্যতা নেই। সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টে রূপপুর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত কোনো মামলা হয়নি, বা সেখানে রায় হয়নি।
এছাড়া, ইনভেস্টিগেটিভ মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, রূপপুর প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।
প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে, ভারত বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি বা তারা কোন হুমকি দেয়নি।
আয়ারল্যান্ডও বাংলাদেশ সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাতিল করেনি। অনুসন্ধানে এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এগুলো যদি সত্য হতো, তাহলে দেশে ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে অনেক প্রতিবেদন হতো, কিন্তু সেটা হয়নি।
১ থেকে ১৫ জুন, ২০২৫ তারিখের মধ্যে অ্যাকাউন্টটির ১০৩টি পোস্টের মধ্যে ৮৩টিতে (৮০ শতাংশ) দেখা গেছে রীম আল-হাশিমির ছবি, ও ১৮টিতে (১৭ শতাংশ) শেখ হাসিনা প্রশংসা করা হয়েছে।
বাকি ৬টি পোস্টে নেতিবাচকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিশানা করা হয়েছে, যেমন বৈঠক বাতিল ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মিথ্যা দাবি করে।
‘বিশেষভাবে উল্লেখ করার বিষয় হলো অধ্যাপক ইউনূস সম্পর্কিত লেখাগুলো নেতিবাচক, আর সর্বশেষ লেখাসহ সব লেখায় শেখ হাসিনাকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ধরনের ভ্রান্ত তথ্যগুলো আওয়ামী লীগের ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দৃষ্টিগোচর করার পর তৈরি করা হয়েছে এবং পরে একাধিক প্ল্যাটফর্মে-এক্স (টুইটার), ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
জাতীয়
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি

পবিত্র হজপালন শেষে এ পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ জন হাজি। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ৬ জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩১ হাজার ৫৯৫ জন রয়েছেন।
শুক্রবার (২০ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৯৩টি ফিরতি হজ ফ্লাইটে দেশে ফেরা হাজিদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ১৪ হাজার ১৮২ জন হাজি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৫ হাজার ৪৫৮ জন ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ৬ হাজার ৯৬১ জন হাজি দেশে ফিরেছেন।
এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে ৩২ বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও নারী ছয়জন। এরমধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ২১ জন, মদিনায় ১০ জন ও আরাফায় ১ জন।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর শেষ ফ্লাইট ৩১ মে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় গত ১০ জুন। এদিন সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ‘এসভি-৩৮০৩’ ৩৭৭ হাজিকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ১০ জুলাই হজযাত্রীদের শেষ ফিরতি ফ্লাইট।
জাতীয়
চট্টগ্রামে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে রাজস্ব আদায়ে মনোযোগী হতে হবে। তবে কর আদায়ের নামে কোনো নাগরিক যেন হয়রানির শিকার না হন, তা দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে চসিক পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে রাজস্ব বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ নগরের সব উন্নয়ন কাজ এই রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। তাই রাজস্ব সংগ্রহে আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব ও সদাচরণ অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, চসিক হোল্ডিং ট্যাক্স ব্যবস্থাকে অটোমেশন করতে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতে অনলাইনে কর পরিশোধের সুযোগ চালু হলে নাগরিক ভোগান্তি কমবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে।
রাজস্ব আদায়ে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে মেয়র বলেন, কারও প্রভাব দেখিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। আইন অনুযায়ী কাজ করুন, আমি আপনাদের পাশে আছি।
২৩ জুন চসিকের নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, হাতে আছে মাত্র ১০–১১ দিন। এই সময়ে সংগঠিতভাবে রাজস্ব আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আমি নিজে বড় করদাতাদের সঙ্গে কথা বলব।
মেয়র বলেন, রাজস্ব আদায় কেবল একটি আর্থিক কাজ নয়, এটি আস্থার জায়গা। মানুষ বিশ্বাস করে কর দেয়, যেন তাদের সন্তান ভালো স্কুলে পড়তে পারে বা পাড়ার রাস্তাটি মেরামত হয়। সেই বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে।
সভায় চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, কর আদায়কারী ও অনুমতিপত্র পরিদর্শকরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দ্রুতই এই সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়নঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
তারুণ্যের গৌরবের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিস বিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।