করোনাকালীন সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ৪০৪ কোটি টাকা উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সিকদার পরিবারের চার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৭ মে) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সিকদার পরিবারের মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারকে আসামি করা হয়েছে। যারা ওই সময় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।
এছাড়া সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার মো. মোহসিন, রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইলের এমডি মঈন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এভিপি মো. একরামুল হক, এসইভিপি ও ম্যানেজার মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক ভিপি মোহাম্মদ আবু রাশেদ নোয়াব, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম বুলবুল, সাবেক এমডি চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে সিএম আহমেদ, সাবেক পরিচালক খলিলুর রহমান, পরিচালক জাকারিয়া তাহের, সাবেক পরিচালক মাবরুর হোসেন সাবেক পরিচালক মো. নায়মুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা ও পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাদ মুসা হোমটেন্দ্র অ্যান্ড ফ্লথিং লিমিটেডের মালিক ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোহসিন ও রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের কর্ণধার মঈন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র এবং অনুমোদনবিহীন প্রক্রিয়ায় প্রণোদনার ঋণ নেন। ব্যাংকের শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালকেরা প্রকৃত আর্থিক প্রয়োজন যাচাই না করেই করোনাকালীন সেটিমুলাস প্যাকেজের ঋণসহ রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে ৪০৪ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। এ অর্থ একাধিক লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর, ফ্লোর ক্রয়, আগের ঋণ পরিশোধ ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারার পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১১ মার্চ সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার, তার মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাদের পরিবারের ১৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এরআগে ৯ মার্চ রন হক সিকদার, তার মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের ৪২টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সিকদার গ্রুপের রন হক, তার মাসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত।