ক্যাটাগরি: রাজনীতি

বর্তমান সরকারকে সফল দেখতে চাই: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অতীতে সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সরকারকে তারা সফল হিসেবে দেখতে চান।

শনিবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, গৌতম বুদ্ধ তার অনুসারীদের জন্য পঞ্চশীল বা ৫টি মৌলিক শিক্ষা ঘোষণা করেছিলেন। প্রতিটি ধর্মেরই কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা ও মৌলিক শিক্ষা রয়েছে। বিশ্বে সত্য, ন্যায় ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই প্রতিটি ধর্মের মূল লক্ষ্য। বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা সমাজ বাস্তবায়নের জন্য ভূমিকা রাখা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। দল-মত নির্বিশেষে সবার নিরাপদ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হলে নিরাপদ ও মানবিক রাষ্ট্র এবং সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্রের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে যারা গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ কায়েম করেছিল, জনগণ তাদের অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ১৯৭১, ৭৫, ৯০ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষ দুটি বিষয়ে একমত: বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আর কেউ তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে না এবং গণতন্ত্রবিরোধী পলাতক তাঁবেদার অপশক্তি আর মাথাচাড়া দিতে পারবে না।

তারেক রহমান বলেন, যারা বারবার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণ আয়না ঘর স্থাপনকারী, গুম-খুন-অপহরণ ও দুর্নীতি-লুটপাটকারীদের পুনর্বাসন চায় না। বিএনপি এই সরকারকে সফল দেখতে চায়। এজন্য সরকারের কাছে একটি স্বচ্ছ পথনকশা ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে।

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশের ফ্যাসিবাদ পতনের পর গত ১৫ বছরের দুর্নীতি ও কুকর্ম আলোচনায় রাখা দরকার। ফ্যাসিবাদী শাসনের দীর্ঘ দেড় দশকে জঙ্গি নাটক ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালিয়ে লুটপাটের ঘটনা আড়াল করা হয়েছিল। কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটনার বিচার হলে ভবিষ্যতে কেউ এর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে না।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, যে রাষ্ট্রে নারী, শিশু ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠী নিরাপদ বোধ করে না, সেই রাষ্ট্র ভালো রাষ্ট্র হতে পারে না। দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের প্রতিটি অধিকার সমানভাবে ভোগ করবে। বিএনপি জনগণের ভোটের মাধ্যমে এমন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যারা জবাবদিহিতা করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের উন্নয়ন ও শান্তি-সমৃদ্ধিতে শামিল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, গৌতম বুদ্ধের জীবনী থেকে অনেক শিক্ষা নেওয়ার আছে। সবাই মিলে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবিধানিকভাবে সবাই নাগরিক এবং বাংলাদেশি। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের মাধ্যমে এই স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। সবাই মিলে সুখী-সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার কামনা করেন তিনি।

বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সুভাষ চন্দ্রা চাকমার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকারসহ বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার