যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রায় চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিশেষ রাজকীয় বিমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে এসেছেন তার দুই পুত্রবধূ—জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। বিগত বছরগুলোতে শামিলা রহমান বিভিন্ন সময় দেশে অবস্থান করলেও ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশত্যাগের পর এই প্রথম দেশে ফিরতে পারলেন জুবাইদা রহমান।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দলের প্রধানকে স্বাগত জানাতে এদিন ভোর থেকে বিমানবন্দর এলাকায় সড়কের দুপাশের ফুটপাতে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হয়েছেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী, খিলক্ষেত ও বিমানবন্দরের সড়কের দুপাশে অবস্থান নেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত সড়কের দুপাশে অবস্থান নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রিয় নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
নেতাকর্মীর অবস্থান ঘিরে গুলশালে বাসভবনের সামনে, বনানী-খিলক্ষেত সড়কে ও বিমানবন্দর এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা, পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ মে) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫ মিনিটে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ রাজকীয় বিমান (অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) খালেদা জিয়া ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে দোহা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
বাংলাদেশ সময় গতকাল সোমবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিশেষ বিমানটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ওইদিন লন্ডনের বাসা থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে হিথ্রো বিমানবন্দরের পৌঁছে দেন। বিমানবন্দরে দলের চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল।
এদিকে, দলের চেয়ারপারসনের আগমন ঘিরে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সাজসজ্জা করা হয়েছে। তার স্বাস্থ্যের জটিলতা বিবেচনায় রেখে সেখানে বিশেষ মেডিকেলের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আধুনিক ও জরুরি চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন কেন্দ্রে রূপান্তর করা হয়েছে বাসভবনটি, যেন কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সংকটে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। পরদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ২টা ৫৮ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে খালেদা জিয়াকে বহনকারী রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।
এরপর তাকে সেখান থেকে সরাসরি ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ নিয়ে ভর্তি করা হয়। ১৭ দিনের ক্লিনিক-পর্ব শেষে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে দেশে ফিরেছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।