সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ রোববার (৪ মে) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন বলে জানিয়েছেন তার জুনিয়র আইনজীবী শিশির মনির।
দীর্ঘ ১১ বছর পর গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছিলেন এই বর্ষীয়ান আইনজীবী। এরপর তিনি পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি তার জুনিয়র আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে তাকে সংবর্ধনাও দিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে যান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। দলটির তৎকালীন আমির ডা. শফিকুর রহমান তার পদত্যাগে দুঃখ প্রকাশ করে তার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকার আশা প্রকাশ করেছিলেন।
পরবর্তীতে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক নতুন রাজনৈতিক দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। তবে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ১৭ আগস্ট তিনিও সেই পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
দেশে প্রত্যাবর্তনের পর রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তিনি একজন কোর্ট রুম ব্যারিস্টার হিসেবে আইনের অঙ্গনে অবদান রাখতে চান। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ ও জাতির খেদমত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।
সিলেটের বিয়ানীবাজারের মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি ‘দ্য ল’ কাউন্সেল’ নামে একটি আইনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তার দুই ছেলেও ব্যারিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টের আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।