কাশ্মিরের মারহামা গ্রামে হামলার পর দক্ষিণ কাশ্মিরের পেহেলগামের দিকে যাওয়ার পথে একটি মহাসড়কে টহল দিচ্ছেন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা—ছবিটি তোলা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। সাম্প্রতিক পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে—এমন শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় পরিসরের যুদ্ধ এড়াতে ভারতকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চায় না এই অঞ্চল কোনো বৃহৎ সংঘাতের মুখোমুখি হোক। শুক্রবার (২ মে) টিআরটি গ্লোবালের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মিরে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে ভারতের যেকোনও পদক্ষেপ যেন গোটা অঞ্চলে বিস্তৃত সংঘাতে পরিণত না হয়, এ বিষয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আশা করি, ভারত এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যাতে এ ঘটনা থেকে কোনো বড় আঞ্চলিক সংঘর্ষের জন্ম না হয়।”
ভ্যান্স আরও বলেন, “আমরা চাই, পাকিস্তান এই হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করুক। আমাদের প্রত্যাশা, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের ভূখণ্ডে থাকা সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত ও দমন করবে। এই পথেই আমরা সমস্যার সমাধান দেখতে চাই। পরিস্থিতির ওপর আমরা নিবিড়ভাবে নজর রাখছি—দেখা যাক কী হয়।”
এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তান তার সামরিক মহড়া শুরু করেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সেনাবাহিনী পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে, যেখানে আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার ও যুদ্ধ কৌশল প্রদর্শন করা হয়। এতে অংশ নেয় দেশের অফিসার ও সেনাসদস্যরা।
বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। কাশ্মিরের ভারত-শাসিত অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ আনে।
পাকিস্তান এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তাদের জড়ানোর চেষ্টা “ভিত্তিহীন” এবং ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদ।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘ দুই দেশকে “সর্বোচ্চ সংযম” প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সমস্যার “অর্থবহ ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে” সমাধানের পথে এগোতে বলেছে।