জাতীয়
রিউমার স্ক্যানারে এপ্রিলে ২৯৬ ভুল তথ্য শনাক্ত

গত এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বিশ্লেষণে, জাতীয়, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে এইসব অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (১ মে) এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, এপ্রিল মাসে জাতীয় বিষয়ে সবচেয়ে বেশি মোট ১০১টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, যা মোট অপতথ্যের ৩৪ শতাংশ। এরপর রাজনৈতিক বিষয়ে ৯৫টি, আন্তর্জাতিক ৩৮টি, ধর্মীয় ২৭টি, প্রতারণা ১০টি, খেলাধুলা ৯টি, শিক্ষা ৭টি, এবং বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ক ৮টি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যম বিচারে দেখা যায়, ১৩৮টি ছিল শুধুই তথ্যকেন্দ্রিক, ভিডিও ভিত্তিক ছিল ১০৫টি এবং ছবিভিত্তিক ছিল ৫৩টি। সব ভুল তথ্যের মধ্যে ১৮০টি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা, ৬৬টি বিভ্রান্তিকর এবং ৪৮টি বিকৃত তথ্য। দুটি ঘটনাকে কৌতুক হিসেবে প্রচার করা হলেও তা বাস্তব দাবির আকারে ফ্যাক্টচেকের আওতায় আনা হয়।
সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্যের ছড়াছড়ি
এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুকে মোট ২৭৬টি। ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্স (সাবেক টুইটার) ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি এবং থ্রেডসে অন্তত ১৩টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে অন্তত ১৪টি ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় উৎস থেকে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার
রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, গত কয়েক মাসের মতো এপ্রিলেও ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে অপপ্রচারের হার ছিল উল্লেখযোগ্য। গত মাসে অন্তত চারটি ঘটনার উৎস ছিল ভারত থেকে, যার মধ্যে ছয়টি ছিল সাম্প্রদায়িক অপতথ্য, যা ছড়ানো হয়েছে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে।
অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূসকে ঘিরে অপপ্রচার
চলতি এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সর্বোচ্চ ২৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই ছিল নেতিবাচক। সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নামেও ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যেমন- ড. আসিফ নজরুল (৩টি), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (২টি), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (২টি), আ ফ ম খালিদ হোসেন, শেখ বশিরউদ্দীন ও প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে একটি করে।
রাজনৈতিক দল ও নেতাদের বিরুদ্ধে অপতথ্য
এপ্রিলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে বিএনপিকে ঘিরে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল এবং দলের অঙ্গসংগঠনগুলোকে ঘিরেও একাধিক অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও ছয়টি, ছাত্রশিবিরকে নিয়ে ছয়টি অপতথ্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগকে নিয়ে ছয়টি তথ্য ফ্যাক্টচেকের আওতায় এলেও সেগুলোর ৭৫ শতাংশই ইতিবাচক ছিল।
রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও অন্যান্য বিষয়
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধেও যথাক্রমে ১৬টি ও ৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। কোটা আন্দোলন এবং ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সম্পর্কেও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে।
গাজা, কাশ্মীর ও সুন্নী মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অপতথ্য
এপ্রিলে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে অন্তত ৩৮টি, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় ১১টি এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত সুন্নী মহাসমাবেশকে ঘিরে পাঁচটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
ভুয়া কনটেন্ট ও মিডিয়া কার্ড
রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ১৯টি ভুয়া কনটেন্ট এবং তিনটি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ২৫টি গণমাধ্যমের নাম, লোগো ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে অন্তত ৬২টি ভুয়া তথ্য প্রচার হয়েছে। যমুনা টিভির নাম ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১২টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে।

জাতীয়
টিউলিপ সিদ্দিককে ফের দুদকে তলব

অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাবেক সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাকে আগামী ২২ জুন দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে টিউলিপের ঢাকার পাঁচটি ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের সই করা এসব চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ পারিতোষিক হিসাবে ইস্টার্ন হাউজিং থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে রেজিস্ট্রি মূলে দুটি ফ্ল্যাট দখল নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ২২ জুন দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য আপনাকে পুনরায় সবিনয় অনুরোধ করা হলো। নির্ধারিত সময়ে আপনি উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে এ বিষয়ে আপনার কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।
এর আগে গত ৮ মে টিউলিপকে আরও একবার তলব করে সংস্থাটি। গত ১৪ মে দুদকে তার হাজির হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে সেসময় তিনি হাজির হননি।
দুদক সূত্রে জানা যায়, গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের বিরোধপূর্ণ জমিতে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন থেকে নিজ নামে একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে দখলে নিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা। অর্থ পরিশোধ না করে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের কাছ থেকে ফ্ল্যাট নেওয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন বলে জানায় দুদক সূত্র।
এর আগে পূর্বাচল নতুন শহরে ১০ কাঠা করে নিজের মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দের অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় তাকে ব্রিটিশ মন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জাতীয়
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত নেপাল থেকে আসা ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। দেশটি থেকে আসা বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। আগামী পাঁচ মাস ভারত হয়ে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে।
রবিবার (১৫ জুন) রাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম বিষয়ট নিশ্চিত করেছেন।
পিডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, নেপাল থেকে শনিবার (১৪ জুন) দিনগত রাত ১২টার পর থেকে আমরা ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত আমরা বিদ্যুৎ পাবো। নেপালে এই সময়টা বর্ষার, এজন্য বর্ষা মৌসুমে শুধু বিদ্যুৎ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর নেপাল থেকে ভারত হয়ে বিদ্যুৎ আমদানি চূড়ান্ত করতে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম লিমিটেড একটি ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিতে ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে। ভারতীয় ট্রান্সমিশন চার্জসহ নেপাল থেকে দেশে আসা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে প্রায় ৭ টাকা।
জাতীয়
ইরানে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু

তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। + ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।
জাতীয়
ভোটের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের যে সময়েই নির্বাচন হোক না কেন প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। তফসিল ঘোষণার সময় ভোটার তালিকা তৈরি থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যেদিন ইলেকশন ডেট হয় তার মাস দুয়েক আগে তফসিল হয়। মানে ৫০-৬০ দিন আগে হবে। তবে ভোটের আট-দশ মাস আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এ মুহূর্তে ঘোষণা সম্ভব নয়। ভোটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ধারণা পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
রোববার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। সামনের কাজগুলোর বিষয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সংশোধন করা হবে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত প্রায়। দল নিবন্ধন ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের মতো বড় কাজ রয়েছে।
তফসিল কবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতদিন তো সরকারই আলোচনা করেছে, আমরা করিনি। উনাদের পজিশনটা আমাদের বুঝতে হবে। বোঝার পরে যেদিন তারিখ ঠিক হবে, অ্যারাউন্ড দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা হবে। ঐতিহাসিকভাবে তা-ই, ৫৫ থেকে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করবো। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে ধারণা পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্যে এপ্রিলের প্রথমার্ধে যে কোনোদিন ভোটের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা এবং লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণার মধ্যে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি।
ফেব্রুয়ারির ভোটের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা এলেও অফিসিয়ালি কোনো কিছু না পাওয়ায় মন্তব্য করতে নারাজ তিনি। এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে হোক- জাতীয় নির্বাচন যখনই হোক, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে আমাদের বলা হয়েছিল ডিসেম্বর থেকে জুন, আমরা সে টাইম স্পেন মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি ও এগিয়ে যাচ্ছি।’
এপ্রিলের ভোটের বিষয়ে জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ হলেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে ‘অফিসিয়ালি’ কোনো কিছু পায়নি ইসি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা এখনো প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের যখন কথাবার্তা হবে, কি ধরনের চিন্তাভাবনা করছে, তখন সিদ্ধান্তে আসতে পারবো। তারিখ নিয়ে, অমুক দিন অমুক তারিখ ইলেকশন হবে এ মুহূর্তে আমি এমন ঘোষণা দিতে পারবো না।’
সরকারের কাছ থেকে যদি ধারণা পাই তাহলে সে অনুযায়ী ইলেকশন ডেলিভার করার জন্য প্রস্তুত আছি এবং প্রস্তুতি নিচ্ছি-যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বললেও সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগেও ভোট হতে পারে বলে মত দেন।
লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
এখন আবার নতুন ডাইমেনশন এসেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, লন্ডনে যে ঘোষণাটা এসেছে অন্যদের মতো মিডিয়া থেকে যেটুকু জানেছি, এর বাইরে কিছু নেই। এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না। ভেতরে কি আলাপ হয়েছে। শুধু যৌথ বিবৃতি যেটা দিয়েছে সেটা তো আন-সাইনড; এটাই বা কতটুকু জেনুইন তাও তো জানি না। কারো স্বাক্ষর থাকলে বুঝতাম এটা সরকারের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একজন সই করেছেন। তাহলে বুঝতাম এটা অফিসিয়াল ডকুমেন্ট।
‘অফিসিয়ালি কোনো কিছু না এলে কিছু করা যাবে না। ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে, আলাপের পেছনেও আলাপ থাকে। ঘোষণা একটা হয়েছে, নিশ্চয়ই ভেতরে অনেক আলাপ হয়েছে।…সেগুলোও আমাদের জানতে হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।
নিরাপত্তা উপদেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা একটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ইসি হয়তো একটা তারিখ ঘোষণা করবেন। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
বিশেষ ধরনের সরকার, বিশেষ ধরনের পরিস্থিতি, একদিকে সরকার বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে; সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করছে। বিচারটা বিচারকের হাতে ছেড়ে দিতে হবে, তবে ত্বরান্বিত করার বিষয় রয়েছে, এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সংস্কারের বিষয় রয়েছে। এসব নিয়ে সরকারই আলোচনা করছে। আমাদের ধারণা, সরকারের পক্ষ থেকে একটা তারিখ ঘোষণা হবে। কিন্তু লন্ডন সফরের পরে দায়-দায়িত্ব কিছুটা আমাদের ওপরই আসছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটু কথাবার্তা না হলে, কোনো নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘(ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন) এটা এখনো আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন আরপিও অনুযায়ী ইসি গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে। ছয় মাস/আট মাস আগে ওই তারিখে নির্বাচন হবে- এটা বলার বিধান আরপিও তে নেই। তফসিল ঘোষণার বিধান বলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঐতিহাসিক নির্বাচন উপহার দেওয়ার কথা বলেছেন। এ নির্বাচনটা করবে ইসি। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনটি করতে চাচ্ছেন।
‘আমাদের বুঝতে হবে, পরিস্থিতিটা বিশেষ পরিস্থিতি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। আমি তো একটা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট দেখেছি, রমজানের আগেও ইলেকশন হতে পারে ‘যদি’। এটাকে ফরমাল বা অফিসিয়াল ওয়েতে ভাবতে পারছি না।’
সিইসি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো কথা হয়নি। আমরা এখন আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। যখনই হয় যেন আমরা নির্বাচনটা ডেলিভার করতে পারি। আমি এখন আমার প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। এখন আমাদের ধ্যানধারণা শয়নে-স্বপনে নিজেদের প্রস্তুতি।’
‘সিইসি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তারিখ ঘোষণা করেন। দশ মাস আগে তারিখ ঘোষণা করে এমন দেখেছেন কখনো? আমরা এখনো কোনো টার্গেট ফিক্সড করিনি। সরকারের সঙ্গে যখন এক্সচেঞ্জ অব আইডিয়া হবে, তারিখ নিয়ে যত আলাপ-আলোচনা সরকারই করেছে। আমরা তো করিনি। সরকারের পরিবর্তিত কোনো চিন্তাভাবনা আছে কি না।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন কি না এমন প্রশ্নে সিইসি জানান, প্রয়োজন হলে দেখা করতে পারেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। সবকিছু বৈঠক করে হবে এমন নয়, বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমেও হয়ে থাকে। সরকারের সহযোগিতা লাগবে। সরকার আলোচনা করছে, আলোচনা অগ্রগতি, বেসিস কি, চিন্তাভাবনা আমাদের বুঝতে হবে। ভিডিও দেখে তো সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। আলোচনাটা সব সময় ওখানে করছে। ভেতরের অন্দরমহলের বিষয়টি বুঝতে হবে।’
ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কয়েকটি দল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া, আল্লাহ তাদের আস্থায় নিয়ে আসুক। আমার বিশ্বাস, আমাদের দলগুলো দেশের মঙ্গল চায়। রাজনৈতিকভাবে অনেক কথা বলতে হয়, আমি এটাকে রাজনৈতিকভাবে দেখি। রাজনৈতিক সচেতন থাকবেন, দলীয় রাজনীতিতে জড়াবেন না- এমন নির্দেশনা কর্মকর্তাদের দিয়েছি।’
ইসির বিরুদ্ধে বললে একদম আহত হন না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সমালোচনাকে স্বাগত জানাই।’
একমত্য কমিশনের লিখিত কিছু না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
নির্বাচনে কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বিষয়টি বারবার স্মরণ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরেন সিইসি। আমরা কারো হুকুমে, কারো নির্দেশনায়, কারো পরিচালনায় আমরা কাজ করি না। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দলীয় স্বার্থরক্ষার জন্যে কাজ না করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
‘অতীতে যা হয়েছে, কেউ যদি মনে করে কেন্দ্র দখল, বাক্স লুট করবে তা দিবাস্বপ্ন। সে সুযোগ এবার আর পাবে না, এটা করতে দেবো না ইনশাহ আল্লাহ। সবাই সুন্দর নির্বাচন চায়।’
জাতীয়
নেপাল থেকে আসছে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে নেপাল। গতকাল শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে দেশটি।
আজ (রবিবার) নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া ত্রিপক্ষীক চুক্তির আওতায় নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হয়েছে। ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে শনিবার রাত থেকে নেপাল বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। ভারতের মুজাফফরপুর-বাহারামপুর হয়ে বাংলাদেশের ভেড়ামারা গ্রিড দিয়ে এই বিদ্যুৎ আসছে।
গত বছরের ৩ অক্টোবর নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া ত্রিপক্ষীক চুক্তি অনুযায়ী নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়।
চুক্তি অনুসারে, ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য ভারতের ৪০০-কেভি ট্রান্সমিশন গ্রিড ব্যবহার করে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে নেপাল।