কেরানীগঞ্জে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণের ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের আওতায় ঘোড়াশাল স্টেশনের নিকটবর্তী টেক অব পয়েন্ট থেকে পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার অভ্যন্তর পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ সাইডিং লাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এই ৩ প্রকল্পের জন্য ৩৯০ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৫ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা) প্রকল্পের পূর্ত কাজের ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
এই প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপত্র জমা পড়ে। ৪টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। তার মধ্যে ৩টি দরদাতার দর সর্বনিম্ন এবং সমদর হওয়ায় এ বিষয়ে বিদ্যমান পদ্ধতি অনুসারে নির্বাচিত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬১ কোটি ৯০ লাখ ১২ হাজার ৮৬৪ টাকা।
এই নির্মাণ কাজের আওতায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন বেজমেন্ট, প্রশাসনিক ভবন, ট্রেনিং সেন্টার মেডিকেল সেন্টার, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, পরিবহনপুল ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।
বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ৩০ এপ্রিল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনে ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ-এর পূর্ত কাজ ২৭৫ কোটি টাকায় যৌথভাবে সিআরএফজি এবং এনডিই’র সঙ্গে ক্রয় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে প্রকল্প চলমান অবস্থায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড পরিবর্তিত হওয়ায় নতুন করে বিভিন্ন ধরনের কমিউনিকেশন ও সিকিউরিটি সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৮৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৯ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
এছাড়া বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার’ প্রকল্পের আওতায় ঘোড়াশাল স্টেশনের নিকটবর্তী টেক অব পয়েন্ট থেকে পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার অভ্যন্তর পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ সাইডিং লাইন নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। ৩টি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কন্সট্রাকশন কো. লি. ঢাকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৪০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার ১০২ টাকা।