ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

অফিসারদের প্রশিক্ষনে আমেরিকা যাচ্ছে বিএসইসি চেয়ারম্যান-কমিশনার

দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ বেড়েই চলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমতে কমতে চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এতে দিশেহারা বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তবে পুঁজিবাজারের এ সংকট দূর না করে বিশ্বের বিভিন্ন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অফিসারদের নিয়ে আয়োজিত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার মো. আলী আকবর। এর আগে বিএসইসি থেকে পরিচালক এবং অতিরিক্ত পরিচালক এই ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। তাই বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার এই ট্রেনিংয়ে অংশ নিচ্ছে যা ১১দিনের বিদেশ সফরকে ‘নিছক ভ্রমণবিলাস’ বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র মতে, পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা এবং আস্থা সংকটে ভুগছে। রাশেদ মাকসুদ কমিশনের কোনো পদক্ষেপে সুফল মিলছে না, বরং সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রধান শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। এমন অবস্থা থেকে উত্তোলনে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার বিদেশ ভ্রমনের সুযোগের সৎ ব‍্যবহার করছে। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অফিসারদের অংশ গ্রহণে ‘৩১তম ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট গ্রোথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে বিএসইসি থেকে অফিসারের পবিবর্তে যাচ্ছে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার। এতে পুঁজিবাজার সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র জানায়, বিশ্বের সকল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অফিসারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩১তম ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট গ্রোথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম। ইউ.এস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আয়োজনে আগামী ৫ মে থেকে ৯ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, ডিসিতে এটি অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে বিএসইসি থেকে অংশ গ্রহণের জন্যও আমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে অফিসারদের এ অনুষ্ঠানে বিএসইসির অফিসারের পরিবর্তে অংশ নেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান ও একজন কমিশনার। যেটি হাস্যকর। এছাড়াও, এই অনুষ্ঠান শেষে ১২ থেকে ১৫ মে আইএসকো ৫০তম বার্ষিক সভায় অংশ নিতে কাতার ভ্রমণ করবেন তাঁরা। পুঁজিবাজারের সংকটময় সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া বাদ দিয়ে সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত। অফিসারদের অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ও কমিশনারের অংশ নেওয়া শুধুই ভ্রমণবিলাস।

জানা গেছে, বিএসইসির চিঠির ভিত্তিতে গত ২০ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যানের এসব সফরের জন্য ১১ দিনের ছুটি প্রদান করা হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এম আশিক রেজা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ০৫ মে থেকে ০৯ মে ‘৩১তম ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট গ্রোথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ এবং পরবর্তিতে ১২ মে থেকে ১৫ মে কাতারের দোহায় আইএসকো ৫০তম বার্ষিক সভায় অংম নিতে মোট ১১ দিনের ছুটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হলো। এই ভ্রমণের সময় তিনি কর্তব্যরত হিসেবে বিবেচিত হবেন, তিনি স্থানীয় মুদ্রায় সমস্ত বেতন এবং ভাতা পাবেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ভ্রমণ সম্পর্কিত সমস্ত ব্যয় বহন করবে, এবং তিনি নির্ধারিত সময়ের বেশি বিদেশে থাকতে পারবেন না বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার মো. আলী আকবরের ভ্রমণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন চেয়ে গত ২৭ মার্চ বিএসইসি থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় বিএসইসি।

এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার