ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

ডিবিএ’র কর্মকান্ডে বিক্ষুদ্ধ বিনিয়োগকারীরা

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে পাঠানো একটি বার্তাকে কেন্দ্র করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন। এ কর্মসূচিকে সফল করতে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে কর্মরত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে ডিবিএ’র পক্ষ থেকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর এমডি ও চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে একটি সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়। ফলে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়। এতে বিক্ষুদ্ধ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবি বর্তমান শেয়ারবাজারের অচল অবস্থার জন্য দায়ী বিএসইসির অযোগ্য চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তার পক্ষে দালালি করতে মাঠে নেমেছে ডিবিএ’সহ শেয়ারবাজারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা। যা অতীতেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্তচোষার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার দালালিতে ব্যস্ত ছিলো। বর্তমানেও ডিবিএ’র মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্বৈরাচারের দোসররা খন্দকার রাশেদ মাকসুদের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিতর্কিত করতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব বানিয়ে রাস্তা নামাতে বাধ্য করছে।

সূত্র জানায়, ডিবিএ’র অনেক সদস্য প্রতিষ্ঠানের কর্তা-ব্যক্তিরাই বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদের অগোচরে সমালোচনা করলেও সামনে গিয়ে তেলবাজিতে লিপ্ত থাকে। রাশেদ মাকসুদের স্বৈরাচারী আচারণের ফলে সম্প্রতি বিএসইসিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে ঘটে যাওয়া নেক্কারজনক ঘটনায় বিএসইসির চেয়ারম্যানের পক্ষে অবস্থান নেয় ডিবিএ ও ডিএসইর কর্তারা। কিন্তু ১২ এপ্রিল ডিবিএ’র নেতারা ঢাকা ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, গণঅভ‍্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জরিমানা ছাড়া কোন উন্নতি নাই। সত‍্যিকার অর্থে বিএসইসিতে কোন কাজ হচ্ছে না। তারা বলেন, কাজ বিএসইসির, কিন্তু বিএসইসি তাদের কাজ মন্ত্রণালয়ে দিয়ে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে ৫০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই বিএসইসিতে গত ৮ মাসে কোন আইপিও পেন্ডিং নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা নাই। ফলে ডিবিএর এমন দ্বৈতনীতির অবস্থান এখন স্পষ্ট বলে বিনিয়োগকারীরা মনে করেন।

এদিকে, বুধবার (২৩ এপ্রিল) ডিবিএ’র সেক্রেটারি মো. দিদারুল গনীর সই করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীর বৃহত্তর স্বার্থে বাজারের শৃঙ্খলা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ ক্ষুণ্ণ হয় এমন সব ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সকল ব্রোকার হাউজগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ)।

ডিবিএ’র বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিবিএ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে সকল সম্মানিত সদস্যদের বিনীত অনুরোধ করা যাচ্ছে যে, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীর বৃহত্তর স্বার্থে বাজারের শৃঙ্খলা ও বিনিয়োগের পরিবেশ বিনষ্টকারী সব ধরণের কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে সকলকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

এবিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম ইকবাল অর্থসংবাদকে বলেন, ডিবিএ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা কোনো সংঘাতপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেইনি। সবগুলো ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সাধারন বিনিয়োগকারীদের পাশে দাড়াতে চিঠি দিয়েছি। তার পরিপেক্ষিতে ডিবিএ এমন নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নির্দেশেই তার দালালি করতে ডিবিএ বিনিয়োগকারীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অনেকগুলো হাউজ থেকে আমাদেরকে জানিয়েছে ডিবিএর পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা ডিবিএর এমন আচারণের ধিক্কার জানাই। শিগগরই আমরা ডিবিএকে ধিক্কার জানিয়ে চিঠি দেবো।

তবে, ডিবিএ’র সেক্রেটারি মো. দিদারুল গনী অর্থসংবাদকে বলেন, আমরা কোনো হুমকি দেইনি। ডিবিএ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে সকল সম্মানিত সদস্যদের বিনীত অনুরোধ করা হয়েছে, পেশাদারিত্বের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করতে। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে আমাদের প্রেসিডেন্ট মহাদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার