ক্যাটাগরি: জাতীয়

পররাষ্ট্রনীতি হবে একান্তভাবে বাংলাদেশের স্বার্থনির্ভর

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, একটি প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে গিয়ে আরেকজন থেকে দূরে থাকার নীতি একটি স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য অতীতের সমস্যা কাটিয়ে ভবিষ্যতের মঙ্গল চিন্তা করে একসঙ্গে কাজ করার সম্ভবত এখন সময় এসেছে।

আজ, ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এমন কথা বলেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমরা এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলাম, বাংলাদেশ কি এখন পাকিস্তানপন্থি পররাষ্ট্রনীতির দিকে ঝুঁকছে? প্রশ্নটি মোটেই আমাদের বিস্মিত করেনি। সব সময় কিছু মানুষ থাকবে যারা বাংলাদেশের স্বাধীন পরিচয়ে বিশ্বাস করতে চায় না।

তিনি বলেন, আমাদের জবাব ছিল স্পষ্ট। অতীতে যাই ঘটুক না কেন, এখন থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে একান্তভাবে বাংলাদেশের স্বার্থনির্ভর ও প্রো-বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের বেসামরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী মহলের অনেকেই মনে করেন যে, ক্ষমাপ্রার্থনা একটি সদিচ্ছা ও সৌজন্যের প্রতিফলন হতো। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সামরিক আমলাতন্ত্র বরাবরই এ ধারণার বিপক্ষে থেকেছে, ফলে আজও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া হয়নি।

ডেপুটি সেক্রেটারি আরও লেখেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে সম্পদ বণ্টনের বিষয়টিও উত্থাপন করেছে। যেটি পূর্ববর্তী সরকারগুলো এড়িয়ে চলেছিল এবং আলোচনার পরিবর্তে বিচ্ছিন্নতাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। একটি হিসাবে, ১৯৭৪ সালের হিসাবে বাংলাদেশের দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল অন্তত ৪.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই হিসাব তৈরি হয়েছিল অভ্যন্তরীণ মূলধন সৃষ্টি, বৈদেশিক ঋণ নিষ্পত্তি এবং বৈদেশিক সম্পদের ধারণার ভিত্তিতে।

এছাড়া ১৯৭০ সালের নভেম্বরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বিদেশি দেশ/সংস্থাগুলোর দেওয়া প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত দাবি রয়েছে বাংলাদেশের। এই অর্থ যুদ্ধের সময় ঢাকা থেকে পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংকের লাহোর শাখায় স্থানান্তর করা হয়।

‘আটকে পড়া পাকিস্তানিদের’ প্রত্যাবাসনও দুই দেশের সম্পর্কের অন্যতম একটি অন্তরায়। অতীতে পাকিস্তান প্রায় ১,২৫,০০০ নাগরিককে ফেরত নিয়েছে, কিন্তু এখনো প্রায় ৩,২৫,০০০ মানুষ বাংলাদেশের ১৪টি জেলার ৭৯টি ক্যাম্পে বসবাস করছেন।

এ বিষয়গুলোই মূলত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্ভবত এখন সময় এসেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য অতীতের সমস্যা কাটিয়ে ভবিষ্যতের মঙ্গল চিন্তা করে একসঙ্গে কাজ করার। একটি প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে গিয়ে আরেকজন থেকে দূরে থাকার নীতি একটি স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার