ক্যাটাগরি: কর্পোরেট সংবাদ

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের আর্থিক স্থিতিশীলতা-টেকসই প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত

চলমান বৈশ্বিক ও দেশীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স পিএলসি ভবিষ্যতমুখী ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধির প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

সবল ও সুরক্ষিত ব্যালেন্স শিট বজায় রাখার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি চিহ্নিত সব ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ, লিজ ও বিনিয়োগের বিপরীতে পূর্ণাঙ্গ প্রভিশনিং সম্পন্ন করেছে, এমনকি কোনো রেগুলেটরি ছাড় না নিয়েও। এই পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক স্বচ্ছতা এবং অংশীজনদের প্রতি দায়বদ্ধতার একটি স্পষ্ট প্রমাণ।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রেণীকৃত ঋণ (এনপিএল) হার কমিয়ে ৯.২৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, যা ২০২৩ সালে ছিল ১১.২০ শতাংশ। একইসাথে, প্রতিষ্ঠানটি ৭৮৬.৯৩ শতাংশ প্রভিশন কভারেজ রেশিও বজায় রেখেছে। যা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার মোকাবেলায় প্রস্তুতির শক্ত প্রমাণ।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চাপে এবং কোভিড-১৯ মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের প্রেক্ষাপটে কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটি রেগুলেটরি ছাড়ের সুযোগ না নিয়েই সব প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ, লিজ, বিনিয়োগ এবং মার্জিন ঋণের ঋণাত্মক ইক্যুইটির বিপরীতে পূর্ণাঙ্গ প্রভিশনিং করেছে।

২০২৪ সালে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স মোট ৭,৮৪৬.৭৭ মিলিয়ন টাকা প্রভিশন বরাদ্দ করেছে এবং ১,২৩৩.০৬ মিলিয়ন টাকা ইন্টারেস্ট সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে, যাতে ব্যালেন্স শিট ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকে। এসব সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপের ফলে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালে ৭,৯৩৭.৮৬ মিলিয়ন টাকা একীভূত কর-পরবর্তী নিট লোকসান রিপোর্ট করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ১,০৪২.৪৭ মিলিয়ন টাকা। তবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই কৌশল ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই, স্থিতিশীল ও পুনরুদ্ধারযোগ্য ভিত্তি গড়ে তুলবে।

১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায়, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা হিসেবে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স একটি কৌশলগত রোডম্যাপ নির্ধারণ করেছে যার মূলভিত্তি হচ্ছে- গুণগত সম্পদ উন্নয়ন, পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ এবং আদায় কার্যক্রম জোরদার করা। এর আওতায় শক্তিশালী ক্রেডিট রিস্ক কন্ট্রোল, এসএমই, রিটেল ও শরিয়াহ্ ভিত্তিক অর্থায়নে সম্প্রসারণ, এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যক্রমে দক্ষতা আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

একইসঙ্গে, আদায় কার্যক্রমে গতি আনতে আইনি ব্যবস্থা, গ্রাহকদের সঙ্গে সক্রিয় আলোচনা, আদালতের বাইরের নিষ্পত্তি এবং তৃতীয় পক্ষের কালেকশন পার্টনারদের সহযোগিতা গ্রহণ করা হচ্ছে।

স্বল্পমেয়াদে এই সাহসী প্রভিশনিংয়ের কারণে মূলধন পর্যাপ্ততা ও ইক্যুইটির ওপর চাপ সৃষ্টি হলেও, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স তার তারল্য শক্তিশালী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং অর্থ পুনরুদ্ধার, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক শক্তি পুনর্গঠন ও শক্তিশালী টেকসই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চলমান রাখবে।

এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার