গাজায় ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ইবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

গাজায় ইসরাইলি বর্বর ও নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি ও ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ সংলগ্ন বটতলায় সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে প্রশাসন ভবন চত্বরের সম্মুখে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।

এসময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসরাইলি হামলায় নারী-শিশু-বৃদ্ধ সহ ৪০২ জন শহিদ হয়েছেন খবরে শুনেছি। ইসরাইলের নৃশংস নির্যাতনের শেষ কোথায়? আজকে গাজায়, পরবর্তীতে আপনার (মুসলমান রাষ্ট্র) দেশে আক্রমণ করবে না, তার কী বিশ্বাস? চুপ থাকলে তো আপনার জীবনেরও নিরাপত্তা নেই। আমরা পশ্চিমা রাষ্ট্রের মানবাধিকারের বুলির কথা বলবো না, তবে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বাধীন দেশগুলো বিলাসবহুল জীবন যাপন করে যাচ্ছে কেন? বিলাসিতা ছাড়েন, সময় থাকতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান রইলো।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি। যে মুসলিম জাতি অপর মুসলিম ভাইকে রক্ষা করতে পারে না, সেই মুসলিম জাতি হিসেবে লজ্জিত বোধ করতেছি।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না বলেন, আজকের ঘটনাগুলো দেখে ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠিত ওআইসি সংস্থার নামটা মুখে নিতে লজ্জা হচ্ছে। মুসলিম স্বার্থে গঠিত হলেও সেইভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি সংস্থাটি। সৌদি সরকারের জন্য এটা ব্যর্থতা। ২০২৫ সালে এসে সম্প্রতি যুদ্ধ বিরতি নামক ধোঁকা ঘোষণা দিয়ে আবারও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালালো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল। স্রষ্টার ভয়ংকর বিচার প্রত্যাশা করছি।

বিক্ষোভে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরাইল যে নৃশংস হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে বিশ্ব মানবাধিকার নামক সংস্থাগুলো নিশ্চুপ রয়েছে। এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো শুধু মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংস করতে বা ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য গঠিত হয়েছে বলে আমার মনে হয়। যখনই দেখেছি মুসলিম উম্মাহ এক হওয়ার জন্য চেষ্টা করে তখন জাতিসংঘ নামক কুতন্ত্র, ইহুদিতন্ত্র সংস্থা মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়।

ইবি শাখা সহ সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, আমরা দেখেছি, অমুসলিম বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতিত হলে মুসলিম বিশ্ব তাদের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু মুসলমানদের ওপর নির্যাতন বা হত্যাযজ্ঞের সময় পুরো বিশ্ব চুপ হয়ে যায়। আমাদের চলাফেরা বা মতাদর্শ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কিন্তু মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রশ্নে বা যখন আমাদের ভাইয়ের ওপর আঘাত আসবে তখন বিশ্ব মুসলিম এমনভাবে শক্ত হাতে দাঁড়াতে হবে যেন প্রত্যেকটা মুসলিম ভাইদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর গাজাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিল যুদ্ধবিরতি। তবে গত সোমবার মধ্যরাতের পরে ঘুমন্ত গাজাবাসীর ওপর নৃশংস হামলায় অন্তত ৪০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নারী-শিশুসহ সব বয়সী ফিলিস্তিনি হতাহত হতে থাকেন।

অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার