শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে ইবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

মাগুরায় বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সেই আট বছর বয়সী শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে সন্তপ্ত পুরো বাংলাদেশ। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গায়েবানা জানাজা আদায় করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র জনতার হাতে আইন তোলে নেয়ার আগে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার করুন। অন্যথায় ছাত্র সমাজ বিচার করতে বাধ্য হবেন। আমরা এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আগের স্বৈরাচার সরকারের সময় ধর্ষককে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার করে দিতো। কিন্তু এই বর্তমান সরকারে কাদের সরকার? ২ হাজার শহিদদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা বসেছেন। জনগণের সেন্টিমেন্ট না বুঝলে বা বিচার করতে না পারলে গদি ছেড়ে দেন। বিচার কার্যালয়ে বিচার না করে একজন দুইজনকে জনসম্মুখে শাস্তি দিতে পারলে আমাদের মনে হয় এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।

ইবি শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী প্রায় ষোলো বছর যাবৎ পতিত স্বৈরাচার যে সিস্টেম চালু করেছে তার মাধ্যমে আমার প্রায় পঞ্চাশ হাজারের উপরে বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কিন্তু তৎকালীন সরকার তার কোনো সুরাহা করেনি এবং কোনো বিচার নিশ্চিত করেনি। আমরা দেখেছি কিভাবে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ঢাকার বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক সায়েম সোবহান আনভীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল আমাদের বোন মুনিয়া। তখন যদি আমরা প্রতিবাদের ভাষা জারি করতে পারতাম, যদি আমরা বিচার নিশ্চিত করতে পারতাম, তৎকালীন সরকারের যদি স্বদিচ্ছা থাকতো, তাহলে আছিয়ার মতো আমাদের বোনদের এ পরিণতি হতো না।

তিনি আরোও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আগের সময়ে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল তা থেকে যদি আমরা বের হতে না পারি তাহলে আমাদের জুলাই স্পিরিট ব্যাহত হবে। ইন্টেরিম সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে পুরো বাংলাদেশকে বের করে নিয়ে আসা। আমরা আহ্বান রাখতে চাই যে, আছিয়া ধর্ষণে যারা অভিযুক্ত তাদেরকে যতদিন না শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে ততদিন আমরা মাঠ ছাড়বো না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো আপনারা সাতদিনের মধ্যে আছিয়া ধর্ষণকান্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাসহ চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রবিবার (৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে শুনানি শুরু হয়। পুলিশ আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এক নম্বর আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন এবং সজীব হোসেন, রাতুল শেখ ও জাবেদা বেগমের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার