বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ১৪টি লে-অফ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাবদ বকেয়া পাওনা পরিশোধ আজ রবিবার শুরু হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপ কর্তৃপক্ষ আজ রবিবার প্রথম দিনে দুটি প্রতিষ্ঠানের ২৪৫ জন শ্রমিককে প্রায় ৮০ লাখ টাকা বকেয়া পরিশোধ করেছে।
বেক্সিমকোর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ ক্রেসিন্ট এক্সেসরিজ ও ইয়েলো অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। কোম্পানি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল সোমবার প্রায় ১১ হাজার শ্রমিককে বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করা হবে।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ রবিবার অল্পসংখ্যক শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করেছে। সোমবার প্রায় ১১ হাজার শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধের কথা জানিয়েছে তারা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ১৪টি লে-অফ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক রয়েছেন ৩১ হাজার ৬৭৯ জন। আর কর্মচারী ১ হাজার ৫৬৫ জন। ১৪টি প্রতিষ্ঠান গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ৬ মার্চ বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ১৪টি লে-অফ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সরকার। ঋণ হিসেবে এই অর্থ দিয়েছে সরকার। বেক্সিমকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কায়সার চৌধুরীর কাছে ওই চেক হস্তান্তর করেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ওই সময় জানানো হয়, ৯ মার্চ থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে। সেই মোতাবেক আজ দুপুরের পর ২৪৫ জন শ্রমিককে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান। ১৩ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ২৯ আগস্ট সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এ ছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন ব্যাংক ঋণখেলাপির কারণে প্রতিষ্ঠানটির ঋণপত্র বা এলসি সুবিধাও বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলো। কাঁচামালের সংকটে কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ ধার দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে।