কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগ সংস্কারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। শনিবার (১ মার্চ) দুপর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘আইন অনুষদের পরীক্ষা ধর্মতত্ত্বে কেন’, ‘অনতিবিলম্বে বিভাগের নাম সংস্কার চাই’, ‘আমরা কেন অস্তিত্ব সংকটে’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি জানান, বিভাগের সেশনজট দূর করা, বিভাগের নামে আইন শব্দটি যুক্ত করা, ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগের কারিকুলাম সংস্কার করা, আইন অনুষদের সাথেই তাদের ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে।
পরে একটা প্রতিনিধি দল উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আলোচনা করে। এসময় তাদের দাবি ‘অনতিবিলম্বে আল ফিকহ এন্ড লিগাল স্টাডিজ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট (ডি ইউনিটের) এর অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বাতিল করতে হবে।’
তারা আরও বলেন, বিভাগের নাম, কারিকুলাম ও সেশন জট সংক্রান্ত যে সব দাবি বিভাগ বরাবর পেশ করা হয়েছিল তা বাস্তবায়নের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনকে অন্তর্ভুক্তি করে এবং আজকের ১ মার্চ মৌন সম্মতিতে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি সহ অনতিবিলম্বে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে।
জানা যায়, গত বুধবার বিভাগে একাডেমিক কমিটিতে আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ‘বি’ ইউনিটের পরিবর্তে ‘ডি’ ইউনিট তথা ধর্মতত্ত্ব অনুষদের সাথে নেয়া হবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে। পাশাপাশি বিভাগের নাম পরিবর্তন ও সেশনজট নিয়ে দাবি তুলে তারা।
বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নাজিমুদ্দিন বলেন, আমরা ডি ইউনিটের অধীনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিভাগের শর্ত ছিল যে ডি ইউনিটের অধীনে পরীক্ষা নিলে সব দিক রক্ষা হয়। সেটা প্রশাসন বিবেচনা করে দেখবেন। ডি ইউনিটভুক্ত হওয়া মানে আইন অনুষদ ছেড়ে দিয়ে ঐ অনুষদে যাওয়া না। ডি ইউনিটে কলা অনুষদও আছে। ২১/২২ বছরের প্রতিষ্ঠিত একটা বিশেষায়িত বিভাগ, এখানে শঙ্কায় থাকার কারণ নাই।
বিভাগের নাম পরিবর্তনে বিষয়ে তিনি জানান, বিভাগের নাম আমরাও পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে অবহিত করেছি। কোনো কিছু হতে গেলে নিয়ম আছে, সময় লাগে, নতুন প্রশাসন আসছেন। নাম পরিবর্তনের বিষয়ে পুরো বিভাগ একমত।
এবিষয়ে উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছি। বিভাগে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিলে সেটা বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার প্রশাসনের রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগামীকাল লিখিত দরখাস্ত দিতে বলা হয়েছে। দুই পক্ষের কথা শুনে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবেন।
উল্লেখ্য, ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৪০০ নম্বরের আইন কোর্স পড়ানোর কথা থাকলেও আল ফিকহ বিভাগে ২২০০ নম্বরের কোর্স পড়ানো হয়। ১৩৬ ক্রেডিট পড়ানোর কথা থাকলেও তা পড়ানো হয় না। এছাড়া তীব্র সেশনজট’সহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম