ক্যাটাগরি: রাজনীতি

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ আজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আজই আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলের। তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এই দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটবে।

এদিকে, দলটির আত্মপ্রকাশকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি৷ টার্গেট প্রায় ৩ লাখ লোকের সমাগম ঘটানো। অনুষ্ঠান সফলভাবে শেষ করতে একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবকরা।

এরইমধ্যে নতুন এই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে ও গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা আসছেন সেসব ঠিক করা হয়েছে। যদিও বেশ কিছুদিন ধরে নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে মতানৈক্য ছিল।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্র জানিয়েছে, তারুণ্য নির্ভর নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন,আরিফুল ইসলাম আদিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.তাসনিম জারা, প্রধান সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে সারজিস আলম, দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

নতুন এই রাজনৈতিক দলে সব মিলিয়ে প্রথমে ১৫১ জনের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে। পরে পর্যায়ক্রমে কমিটির আকার বাড়ানো হবে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকায় ভেন্যু পরিদর্শনে এসে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা এক সঙ্গে ঐতিহাসিক পার্লামেন্টের সামনে রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবো। এজন্য আমরা ঐতিহাসিক পার্লামেন্টকে সিলেক্ট করেছি কারণ তরুণরা বাংলাদেশের ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে নতুন কিছু সংযোজন করতে যাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা এবং সমাজের নানা ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকাবাসীর যেন দুর্ভোগ না হয় এজন্য আমরা ডিএমপির সঙ্গে কমিউনিকেশনে আছি। এখানে ফায়ার সার্ভিস থাকবে এবং নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা থাকবে। আমরা সব দলকে ইনভাইট করেছি আশা করছি তারা সবাই আসবে।

রাজনৈতিক দল গঠনের পর নিজস্ব কার্যক্রমে ফিরবে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পর পূর্ণ উদ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটি তার কার্যক্রমে ফিরবে। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মিরাজ মিয়ার গণমাধ্যামে পাঠানো এক বার্তায় একথা জানানো হয়। মূলত জাতীয় নাগরিক কমিটির ১১তম সাধারণ সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত সমূহের স্পষ্টিকরণ ব্যখ্যায় বিষয়টি জানানো হয়।

জানানো হয়, ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় সদস্যদের উপস্থিতিতে ১১ তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়:

১। আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক ব্যতীত জাতীয় নাগরিক কমিটির অবশিষ্ট অর্গানোগ্রাম, নির্বাহী কমিটি, সেলসমূহ ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ জাতীয় নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা, সংস্কৃতি, জলবায়ু, কূটনীতি, দপ্তর, সোশ্যাল মিডিয়াবিষয়কসহ ইত্যাদি যে সেলগুলো করা হয়েছিল সেগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক এর পাশাপাশি ‘যুগ্ম’ ও ‘সহ’ যে পদগুলো ছিল (যেমন-যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম সদস্য সচিব, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, সহ মুখপাত্র ইত্যাদি) সেগুলোও বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাছাড়াও, জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ৩৪ সদস্যের যে নির্বাহী কমিটি এবং কমিটিতে নতুন সদস্য নেওয়ার জন্য যে সার্চ কমিটি ছিল সেগুলোও বিলুপ্ত করা হয়েছে। কারণ এই পদগুলোতে থাকা অনেক সদস্য আসন্ন রাজনৈতিক দলে যুক্ত হতে যাচ্ছেন।

তাই ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দল গঠিত হবার পর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বর্তমান আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক দায়িত্ব নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। বর্তমানে দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিরা তাদের দায়িত্ব নতুনদের কাছে হস্তান্তর করবেন। নতুন নেতৃত্বরাই পরবর্তী সময় তাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন নির্বাহী কমিটিতে কারা থাকবে, সেল ও সম্পাদকগুলোতে গুলেতে কারা থাকবেন।

বার্তায় জানানো হয়, এককথায় নতুন দলে বর্তমান অনেক সদস্য চলে যাওয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন করে পূর্ণগঠন করা হবে। দলে যোগ দিচ্ছেন না এমন সদস্যদের সদস্যপদ বহাল থাকবে। জাতীয় নাগরিক কমিটি পুনরায় নতুন উদ্যোমে তার নিজস্ব কার্যক্রমে ফিরে যাবে।

২। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ নতুন দল আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটির রাজনৈতিক দল গঠনের ঐতিহাসিক দায়িত্ব সম্পন্ন হয়েছে। দল গঠনের পর থেকে জানায় সিভিল-পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই থেকে যাবে। আর কোন দল গঠনের উদ্যোগ নেবে না। এছাড়া, আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের স্বার্থে জাতীয় নাগরিক কমিটি সর্বদা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবে।

অর্থাৎ, জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশের সময় দেশকে একটি নতুন রাজনৈতিক দল উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। জনগণের পক্ষ থেকে চলমান বাস্তবতায় বাংলাদেশমুখী, মধ্যপন্থি, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক একটি রাজনৈতিক দলের যে প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছিল, তারই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি নতুন রাজনৈতিক দল জাতিকে উপহার দিতে যাচ্ছে। এই দল আত্মপ্রকাশের পর নতুন করে আর দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ জাতীয় নাগরিক কমিটি করবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটি তার সাংগঠনিক কার্যক্রম বর্তমানের মতোই একটি সিভিক পলিটিক্যাল প্লাটফর্ম হিসেবেই চালিয়ে যাবে।

বার্তায় আরও জানানো হয়, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে যে প্রতিনিধি কমিটিগুলো গঠিত হয়েছিল এবং পেশাজীবীদের নিয়ে যে উপকমিটি বা প্রতিনিধি কমিটি হয়েছিল সে সব কমিটির যে সব সদস্য আসন্ন রাজনৈতিক দলে যুক্ত হতে

শেয়ার করুন:-
শেয়ার