ভিসি, প্রো-ভিসির অপসারণ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চিঠি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শুক্রবার শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই চিঠি পাঠান। এতে তারা দ্রুত নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানান।

চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘আমরা কুয়েটের সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ। অথচ ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ছাত্রদলের সদস্যরা ফর্ম বিতরণ শুরু করলে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন। কিন্তু হঠাৎ করে ছাত্রদলের কর্মীরা মিছিলের ওপর হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়, যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলা চালায়, যা চার ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। এই ন্যক্কারজনক হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি।’

চিঠিতে শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ‘এই মর্মে আমরা সকল শিক্ষার্থীরা ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করি। আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ভিসির অপসারণ দাবি করা হচ্ছে।’

এ ছাড়াও, চিঠিতে ভিসির অপসারণে শিক্ষার্থীরা যেসব কারণের কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো- রাজনীতি মুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি অনুপ্রবেশের অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্তৃক আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া, দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার পরও ব্যর্থতার দায় অস্বীকার করা, যথোপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও চিহ্নিত কুয়েট ছাত্রদল এবং স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে স্বীকার না করা এবং ভিসির কাছে সেই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রদানকৃত ছয় দফা দাবি পূরণের পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পরও দাবি সম্পূর্ণরূপে মেনে না নেওয়া।

শিক্ষার্থীরা চিঠিতে উল্লেখ করেন, অভিভাবকহীন ও অনিরাপদ কুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় চলমান করার জন্য অতিদ্রুত নতুন ভিসি এবং প্রো-ভিসি নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। যারা আমাদের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে অভিভাবকের দায়ভার নেবেন।

কুয়েটের পাঁচ ব্যাচের ১৬টি বিভাগের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী এই চিঠিতে সই করেছেন বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার