ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

পাঙ্গাস-তেলাপিয়াতে স্বস্তি, অপরিবর্তিত গরু-মুরগির দাম

শীতের বিদায়ে শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হতে থাকায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে তেলাপিয়া-পাঙ্গাসসহ বেশ কিছু মাছ এবং মুরগির মাংসের দাম দুইশোর নিচে থাকায় কিছুটা স্বস্তি মিলছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে। গরু-খাসির মাংস অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে মাঝারি সাইজের পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি, কিছুটা বড় পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকাতে। এদিকে মাঝারি তেলাপিয়া মাছও বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা কেজিতে। একটু বড় আকৃতির তেলাপিয়া কিনতে গুণতে হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আজকের বাজারে সরপুঁটি মাছও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার মধ্যেই। এছাড়া শিং ৩৫০-৪০০ টাকায়, বড় আকৃতির রুই ৩৫০ টাকায়, ছোট আকৃতির রুই ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কার্প ২২০-২৪০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মলা মাছ ৩৫০ টাকা এবং শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।

এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মুরগির মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষ্যে গত সপ্তাহে মুরগির বাড়তি চাহিদা ছিল। এ কারণে মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম আবার কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও প্রতি কেজি সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এমনকি আজকের বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়।

গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে গরুর মাংসের দামে। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। এদিকে আজকের বাজারে গরুর কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা এবং খাসির কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

পূর্ব রামপুরা বাজার থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে পাঙ্গাস মাছ কিনেছেন ভ্যান চালক শহিদুল ইসলাম। আড়াই কেজি মাছের দাম পড়েছে ৪৫০ টাকা। তবুও দাম তুলনামূলক কম থাকায় স্বস্তি নিয়ে তিনি বলেন, মাছ-মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় কোনোরকম খেয়েপরে পরিবার নিয়ে চলা যাচ্ছে। পাঙ্গাস মাছ কিনেছি ১৮০ টাকা কেজি করে। সংসারে ৫ জন মানুষ। দামটা একটু বাড়তি থাকলেই পকেটেও টান পরে।

তিনি বলেন, সরকার যদি বাজারের দিকে একটু নজর দেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরও কমে যাবে। এখন তো ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম কমায় বাড়ায়। এই সরকারের কাছে আমাদের মতো মানুষের অনেক প্রত্যাশা।

বনশ্রী এ ব্লক কাঁচাবাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় মাওলানা রফিকুল ইসলাম নামক এক মাদ্রাসা শিক্ষকের সঙ্গে। বাজারদর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্লকের এ বাজারে জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। এখান থেকে ব্রয়লার নিয়েছি ২০০ টাকা কেজিতে। অথচ একটু ভেতরে গেলেই ১৯০ টাকায় কেনা যায়। শবেবরাতের আগে মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছিলো ২০/৩০ টাকা পর্যন্ত। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, স্থিতিশীলতাও নাই। আজ দেখছি কম, আবার কাল সকালেই যে বেড়ে যাবে না তার কোনো ঠিক নেই।

অপরদিকে মাছ-মাংসের বাজার নিয়ে ক্রেতাদের সন্তুষ্টিতে খুশি বিক্রেতারাও। রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়াও বলেন, এ সপ্তাহে মাছের বাজারে দাম কিছুটা নিম্নমুখী, তবে বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। দাম একটু কম থাকলে সবসময়ই বেচাকেনা ভালো থাকে। অনেক সময় সকালেই সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়, আবার বাজার বাড়তি থাকলে বরফ দিয়ে পরদিনও বিক্রি করতে হয়।

মুরগির মাংস বিক্রেতা আব্দুল হামিদ বলেন, গত সপ্তাহেই মুরগি বিক্রি করেছি ২২০ টাকা কেজিতে, তখন শবে বরাত উপলক্ষ্যে দাম কিছুটা বেশী ছিল। আজ ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। কেউ হয়ত ১৯০ টাকায় বিক্রি করছে, কিন্তু সেগুলো নির্ভর করে মানের উপর।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিনে মুরগির চাহিদাটা একটু বেশিই থাকে। সেইসঙ্গে দাম গত সপ্তাহের তুলনায় একটু কম থাকায় আজ বিক্রিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার