সময়ের পরিক্রমায় ব্যস্ততা বেড়েছে মোংলা বন্দরের। আমদানিকারকরা আস্থা রাখায় দিন দিন বাড়ছে কন্টেইনারবাহী জাহাজের আগমন। এতে বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বাড়াতে তিন হাজার ৫৯২ কোটি টাকা ঋণ দেবে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী চীন। এতে বন্দর ব্যবহারকারীদের আধুনিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। মোংলা বন্দর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
কন্টেইনার এবং মালামালের সুষ্ঠু ও নিরাপদ উত্তোলন-অবতরণ নিশ্চিত করতে ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় চার হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বাকি তিন হাজার ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চীন সরকারের জিটুজি ঋণ থেকে আসবে। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ডিসেম্বর ২০২৮ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ও যুগ্মসচিব ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। আরও জেটি ও ডাটা সেন্টার হবে। আইসিটি খাত শক্তিশালী হবে। বন্দর পরিচালনায় প্রয়োজনীয় আইসিটি সুবিধাদি যুক্ত হলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। প্রকল্পে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অন্যান্য দেশের কাগো হ্যান্ডেলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরটির আঞ্চলিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, বর্তমানে মোংলা বন্দরে ৪৭টি জাহাজ একসঙ্গে নোঙ্গর করতে পারে। কিন্তু কোনো কন্টেইনার জেটি নেই। মোংলা বন্দরে বর্তমানে বার্ষিক এক কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো এবং এক লাখ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে। প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল এবং চীনের উচ্চ পর্যায়ের তাগিদেই এটি অনুমোদিত হয়েছে। সরকার ঋণনির্ভর প্রকল্প কমাতে চায়, তবে মোংলা বন্দরকে আরও কার্যকর করতে এটি অপরিহার্য। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকায় মোংলা বন্দর নেপাল, ভুটান এবং পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।