ক্যাটাগরি: রাজনীতি

তারেক রহমান যাকে মনোনিত করবেন, সবাই তার নির্বাচন করবো: আজম খান

দেশের মাটিতে পা রেখেই সাংগঠনিক দক্ষতার চমক দেখালেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপি উপদেষ্টা মো. আজম খান। প্রায় ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশের মাটিতে তাঁর পা রাখার খবর পেয়ে চাঁদপুরসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিমানবন্দর এবং জিয়া উদ্যানে সমবেত হয়। এদিন সকাল ১০ টায় বিমান বন্দরে নামেন বিএনপির দুঃসময়ে অন্যতম সাহসী যোদ্ধা মো. আজম খান। এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে তাকে স্বাগত জানিন।

বিমান বন্দরে থেকে আজম খান নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে ছুটে যান। এসময় মো. আজম খানের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকার রাজপথ শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে। দুপুর ১২ টায় তিনি প্রায় ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং কবর জিয়ারত করেন।

এসময় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কারণে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী দেশে থাকতে পারেনি। তাদেরই একজন বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য মো. আজম খান। তিনি দীর্ঘ বছর পর আজ নিজের জন্মভূমিতে পা রেখেছেন। তবে বিদেশের মাটিতে থেকেও তিনি দলের দুঃসময়ে একজন যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি গণতন্ত্র এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে একজন সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। দল এবং দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন।

আব্দুস সালাম আরো বলেন, স্বৈরাচারী নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী বিএনপিকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন। স্বৈরাচার হাসিনার পতন হলেও গণতন্ত্র এখনো পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকাতে হবে।

জিয়াউর রহমানে কবর জিয়ারত শেষে মো. আজম খান বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এসময় তিনি বলেন, আজ অনেক বছর পর আমি আমার মাতৃভূমিতে আসতে পেরেছি। স্বৈরাচার হাসিনা আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর জীবন থেকে এমন অনেক সুন্দর দিনগুলো কেড়ে নিয়েছে। আজ বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখে আপনাদের উপস্থিতি দেখে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। আমি শহীদ জিয়ার আদর্শকে ভালোবেসে বিএনপির রাজনীতি করি।‌ আমার রাজনীতির পথচলা ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে। চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছিলাম। বিএনপির দক্ষিণ আফ্রিকা শাখার প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি ছিলাম।

আজম খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই যুগের একজন নেনসন মেনডেলা। বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি দেশান্তরী হয়েছেন। তার পিতা এদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক এবং আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। দেশের জন্য তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার মা বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনার নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সেও বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। এরপরেও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে ছিলেন আপোষহীন। ছাত্রজনতার গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। আমারা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তবে এখনো আমাদের গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে বিএনপির প্রতিটা নেতাকর্মীকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, আগামীর নির্বাচন হবে স্বচ্ছ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমাদের স্বচ্ছ প্রার্থী প্রয়োজন। তাই দেশ এবং দলের প্রয়োজনে আমাদের মাঠে কাজ করতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার কথা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। চাঁদপুরে আমরা বিএনপির বৃহৎ পরিবার এক ও অভিন্ন হয়ে দেশ ও দলের কল্যাণে কাজ করবো‌। চাঁদপুরের মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে আমরা মানুষের ভোট নিবো‌‌। আওয়ামী লীগের মত ভোট ডাকাতি কিংবা নিজেরা নিজের সহযোদ্ধা- ভাইদের সাথে ক্লেশ করবো না। আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান যাকে মনোনিত করবেন তাকে আমরা সবাই সম্মান করবো। বর্তমানে যিনি আছেন তাকে আমরা সবাই সম্মান করবো। ওনাকে যদি একশো বছরও রাখেন, আমরা তার নির্বাচন করবো।

চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েলের পরিচালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ খান, রাফিউস শাহাদাত ওয়াসিম, জিসান চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এমদাদুল হক মিলন সহ আরো অনেকে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার