জ্বালানি তেলের উত্তোলন ও বিপননকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের বৃহত্তম সদস্য রাশিয়া খনি থেকে তেলের উত্তোলন সীমিত রাখায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। বস্তুত টানা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মন্দাবস্থা চলার পর মঙ্গলবার থেকে বাজারে ফের চাঙাভাব শুরু হয়েছে।
ব্রেন্ট এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)- অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের এ দুই বেঞ্চমার্কের দামই বেড়েছে গতকাল। বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, মঙ্গলবার প্রতি ব্যারেল (এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট বিক্রি হয়েছে ৭৬ দশমিক ২১ ডলারে। আগের দিন সোমবারের চেয়ে এই দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
একই দিন ডব্লিউটিআই ব্র্যান্ডভুক্ত অপরিশোধিত প্রতি ব্যরেল তেল বিক্রি হয়েছে ৭২ দশমিক ৫৫ ডলারে। ব্রেন্টের মতো ডব্লিউটিআই ব্র্যান্ডে তেলের দামবৃদ্ধির হারও শতকরা দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ঘন ঘন ওঠানামা করা সত্বেও গত এক মাসে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে দু’ শতাংশ।
তাদের মতে, রাশিয়া এবং ওপেক প্লাসের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ হ্রাসই তেলের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রুশ তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করায় ২০২২ সালের প্রথম কয়েক মাস হু হু করে বাড়ছিল তেলের দাম। কিন্তু ডলার সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন দেশ তেল কেনার পরিমান কমিয়ে দেওয়ায় এক সময় পড়তে শুরু করে তেলের দাম।
ফলে দীর্ঘদিন ধরে বাজারে মন্দাভাব ছিল। এই পরিস্থিতিতে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গত বছর রাশিয়া এবং ওপেক প্লাসের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্ররা তেলের দৈনিক উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও তেলের দৈনিক উত্তলন হ্রাসের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ওপেক প্লাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত এ কারণেই ফের ধীরে ধীরে চাঙ্গাভাব ফিরে আসছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে।