শিক্ষক হামলার প্রতিবাদে ইবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহীনুজ্জামান স্যারের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। পরবর্তীতে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণদিত ভাবে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামানের হামলা করা হয়। আজকে একজন শিক্ষকের গায়ে হাততোলা হয়েছে। প্রক্টর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বচ্চ আইন কর্মকর্তা। তার গায়ে হাততোলা তোলা মানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের গায়ে হাততোলা। যেখানে আজকে প্রক্টর স্যারের উপরে হালমা হয়েছে কাল ভিসি স্যারের উপর হামলা করবে না এটার ব্যাখ্যা কী? এটা যদি বিচার না করা হয় ভবিষ্যতে তার আরো সাহস পাবে, আরো বড়কিছু করার চেষ্টা করবে।

পরবর্তীতে স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, গত ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে বাসের সিট ধরাকে কেন্দ্র করে দুইটি বিভাগের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ শাহীনুজ্জামান স্যারের উপর কাপুরুষোচিত হামলা হয়েছে, আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

অধ্যাপক ড. মো. শাহীনুজ্জামান শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরই নন, তিনি একইসাথে ইইই বিভাগের বর্তমান সভাপতি। আমাদের শিক্ষক তথা বিভাগীয় সভাপতির উপর এমন বর্বরোচিত হামলা সমস্ত শিক্ষক সমাজের জন্য অবমাননাকর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মান বজায় থাকলে তবেই একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। শিক্ষকের উপর এই ধরনের হামলা আমাদের সেই বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে।

আমরা ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনার নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি যে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। ভবিষ্যতে যাতে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়েও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আপনার নিকট জোড় দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল দায়িত্বশীল যিনি তার উপর যখন হামলা হয় স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশ্নবৃদ্ধ হয়। তোমার ইতো মধ্যে জেনেছো এ এর জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।অতি দ্রুতই তোমাদের দাবির একটা সমাধান আসবে। তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তোমরা একটু ধৈর্য ধারণ করো। তোমাদের দাবির সাথে আমরা একমত। তদন্তে যারা দোষী সাবস্ত হবে তাদের উপর প্রশাসন অবশ্যই সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব বলেন, তোমারা একটি মহানুভবতার কাজ করেছো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এই প্রথম শিক্ষক হামলার বিচার চেয়ে জোড়ালো প্রতিবাদ করেছো। সুষ্ঠু তদন্ত করে এই ঘটনার দৃষ্টিান্তমূলক বিচার হবে। যা বিশ্ববিদ্যালের ৪০ বছরও হয়নি এমন বিচার করবে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারের কিছুটা হেরফের মনে হলে প্রয়োজনে আমরা বিচার বিভাগীয় পর্যন্ত নিয়ে যাব।

অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার