রাবিতে অর্ধশতাধিক স্টল নিয়ে তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা শুরু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘আরইউএসসি ন্যাশনাল সায়েন্স ফিয়েস্টা ২০২৪’। এবারের বিজ্ঞান মেলায় রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) সামনে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। পরে মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্টের প্রায় অর্ধশতাধিক স্টল নিয়ে বসেছেন টিএসসির সামনের মাঠে। এসব আবিষ্কার দেখতে বিজ্ঞান মেলায় শিশুদের নিয়ে অভিভাবকসহ ভিড় জমাচ্ছেন আগ্রহী দর্শনার্থীরা।

এবারের বিজ্ঞান মেলায় মোট ১৩টি সেগমেন্ট থাকছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে, সায়েন্স অলিম্পিয়াড, কেইস সলভিং, সায়েন্টিফিক পেইন্টিং কম্পিটিশন, ওয়াল ম্যাগাজিন, সায়েন্টিফিক ডিবেট, পোস্টার প্রেজেন্টেশন। এছাড়া এর বাইরে থাকছে মোবাইল অ্যাপ আইডিয়া কম্পিটিশন, রুবিক্স কিউব, এআই বেইসড বিজনেজ আইডিয়া কম্পিটিশন, দাবা প্রতিযোগিতা, ফটোগ্রাফি কনটেস্ট। যাতে সবাই অংশগ্রহন করতে পারবেন।

এবারের মেলায় টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ, স্ট্রেটেজিক পার্টনার হিসেবে থাকছে বিডিএপস, ব্রোঞ্জ স্পন্সর উত্তরায়ন আমানা সিটি, স্ন্যাক্স পার্টনার যুক্ত হয়েছে বোম্বে সুইটস, লার্নিং পার্টনার ওলিন এআই, মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যমুনা টেলিভিশন ও দ্যা বিজনেস স্ট্যান্টার্ড এবং দিনকাল, কমিউনিটি পার্টনার জেসিআই ঢাকা ওয়েস্ট।

বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের দশম শ্রেণীর মারিয়া খাতুন বলেন, আমি গত দুই বছর ধরে সায়েন্স ক্লাবের সাথে যুক্ত আছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের সেগমেন্টে থাকে। শিক্ষার্থীরা তাদের ইচ্ছা মত বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়। নিজেদের প্রতিভা, জ্ঞান বিকাশের একটা সুযোগ পায় আমরা। দিনদিন বিজ্ঞান মেলার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমি খুবই গর্বিত এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে।

নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত বলেন,আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পারি। এটা বেশ ভালো একটি উদ্যোগ। এই আয়োজনের মাধ্যমে অনেক তরুণ বিজ্ঞানী উঠে আসবে। সমাজ ও রাষ্ট্রের উপকার হবে। এর মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো এবং দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

রাবি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি মাসুদ বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি বিজ্ঞানধর্মী আয়োজন করার জন্য। বাংলাদেশ থেকেই নিউটান বা বর্তমান সময়ের ইলন মাস্ক হওয়া সম্ভব। সেই সুযোগ আমাদেরকেই তৈরি করে দিতে হবে। বাংলাদেশে অনেক কিছু নিয়েই আমরা কাজ করি কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের আগ্রহ কম।

তিনি আরো বলেন, আমরা বইরের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই কত উন্নত তারা। এর মূল কারণ সেই দেশগুলোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিকে নির্ভরশীলতা। বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে তুলে ধরতেই আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিকে বেশি সুযোগ তৈরি করতে হবে।ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে দেখার জন্যই আমরা এই আয়োজন করে থাকি।

উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এটা খুবই ভালো উদ্যোগ এবং ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে। আমি প্রোজেক্টগুলো ঘুরে দেখলাম। খুবই ইনোভেটিভ। আমি মনে করি এই উদ্যোগ সামনের দিনগুলোতে আরো শক্তিশালী হবে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞান চর্চার স্পৃহা সাইন্স ক্লাব ইতিমধ্যে বাড়িয়ে তুলেছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরো বড় ভূমিকা পালন করবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান, সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক শেখ সৈকত সাবেক-বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ।

অর্থসংবাদ/জুবাইর/এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার