ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দাওয়াহ সোসাইটির উদ্যোগে কুরআন বিতরণ করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে দুই হাজার কুরআন বিতরণ করা হয়।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন সংলগ্ন আম বাগানের মুক্ত মঞ্চে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি দাওয়াহ সোসাইটি সংগঠনের সভাপতি ম. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও অধ্যাপক ড. ম. জাহাঙগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, আলোচক হিসেবে আল কুরআন একাডেমি লন্ডনের সভাপতি হাফেজ ড. মনির উদ্দীন আহমদ ও বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকবৃন্দ সহ প্রায় তিন সহস্রাধিক শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মু.মাহমুদুল হাসান বলেন, পবিত্র কুরআনের অর্ধেক মানা আর অর্ধেক না মানা এটা ইসলামের দাবি নয়, অর্থাৎ পরিপূর্ণতায় ইসলাম। আমরা চাই সবার হাতে কুরআন থাকবে তার চেয়ে অধ্যয়ন ও সুরক্ষিত রাখবে। সুরক্ষিত মানে এটাকে বুঝা, মানা এবং এর বাণী অন্যের কাছে পৌঁছে দেয়া।
আলোচক আল কুরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, শৈশবে সকাল বলায় কুরআন বুকে নিয়ে মক্তব্যে যাওয়া হতো কিন্তু আধুনিক সময়ে ‘মর্নিং স্কুল পিরিয়ড’ নামে এমন একটা নিয়ম করছে যা আমাদের জন্য ষড়যন্ত্র। পৃথিবীর এক বিশাল জনগোষ্ঠী জানেই না কুরআন কী, আমাদের উদ্যোগে চেষ্টা করে যাচ্ছি কুরআন বিশ্বজাহানে কুরআন পৌঁছে দিতে। আমাদের যাত্রা শুরু হয় ১৪ বছর আগে, এর পর থেকে আলহামদুলিল্লাহ এ যাবৎ ২০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। আমাদের প্রবীণ বা বুড়ো প্রজন্ম কী করেছে জানার বিষয় না। কিন্তু নতুন প্রজন্মকে কুরআন দিয়ে দায়িত্ব নিতে বলব। বর্তমান পৃথিবীতে যেভাবে কুরআনের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে, সেই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে সবার প্রতিটি আমরা কুরআন পৌঁছে দিতে চাই। ছোট আকারে হলেও বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন বিতরণ করেছি। প্রায় পাবলিক প্রাইভেট মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮ লক্ষ শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রত্যেকের কাছে কুরআন হাতে তুলে দেবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, সমাজের মাঝে প্রচলিত আছে কুরআন একটি ধর্মগ্রন্থ, কথাটি ভুল বরং কুরআন হলো পূর্নাঙ্গ সৃষ্টির গ্রন্থ। আমাদের সৃষ্টি তত্ত্ব কিভাবে পরিচালিত হবে তার ম্যানুয়েল হল কুরআন। কুরআনের একটি নাম হলো ‘কালামুল্লাহ’ যার অর্থ, আল্লাহর কথা। অর্থাৎ এটি কোন প্রচলিত মতবাদ বা মতাদর্শের ব্যাক্তিদের কথা নয়, এটি আল্লাহর কথা। যা কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত নয়; এটি সম্পূর্ণ মানবজাতির জন্য।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, কুরআন নাজিল হয়েছে মানুষের বোঝার জন্য, যদি না বুঝে তাহলে হেদায়েত প্রাপ্ত হবে না। তিনি কুরআনের রেফারেন্স দিয়ে বলেন, কুরআন মাজিদ মানব সমাজে জন্য হেদায়েত স্বরূপ। যেমন মানব সমাজকে পথ দেখাবে; সে কোন গন্তব্য যাবে; তার জীবনে লক্ষ কী হবে ইত্যাদি। কুরআনের প্রথম নাজিল হওয়া আয়াত, ‘ পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছে।’ না বুঝে পড়লে তো এর কোনো অর্থ নেই। এটি নাজিল হয়েছে বোঝার জন্য। এজন্য এর শব্দ ভান্ডার এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন সবাই বুঝতে পারে।
তিনি বলেন, কুরআন মসজিদের যে মেসেজ তা দিয়ে মানুষের জীবনের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ এই জন্য কুরআনকে বোঝা দরকার৷ আর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এ দিক থেকে একটি বিশেষ শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থী।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম