মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবৈধ চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ১০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। প্রবাসী অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর দ্য স্টার।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনের (ফার্মেসি) সহযোগিতায় পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ও অপারেশন বিভাগ যৌথভাবে অভিযান চালায়। অভিযান চালানো হয় জালান তুন তান সিউ, লেবোহ, পুডুহ এবং জালান সিলাংসহ ১০টি স্থানে।
অভিযানে ৩১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১০ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজনের কাছে পরিসেবা খাতের জন্য একটি অস্থায়ী ওয়ার্ক ভিজিট পাস ও ছয়জনের কাছে নির্মাণ খাতের অস্থায়ী ওয়ার্ক ভিজিট পাস ছিল। এ ছাড়া দুজন অতিরিক্ত সময় ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেছিলেন এবং অন্যজনের কাছে কোনো ভ্রমণ নথি বা বৈধ পাস ছিল না।
অভিযানে জাল চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ৫০২ ধরনের অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ করা হয়। এসব ওষুধের বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ ৬৫ হাজার ১৯২ রিঙ্গিত।
জাকারিয়া শাবান জানান, গ্রেপ্তাররা লাইসেন্সবিহীন চিকিৎসাসেবা দিতেন এবং তাদের কার্যক্রম শুধু বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
জব্দ করা ওষুধগুলো বাংলাদেশ থেকে আনা হতো, যা মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়।
বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকরা এসব ওষুধ আনতে সাহায্য করতেন। রেস্টুরেন্ট এবং খুচরা দোকানের আড়ালে এই কার্যক্রম পরিচালিত হতো। প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য ৫০ থেকে ২০০ রিঙ্গিত চার্জ করা হতো। চক্রটি গত এক বছর ধরে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
আটকদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫২-এর ধারা ১৩(ক), বিষ (সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস) রেগুলেশন ১৯৮৯-এর রেগুলেশন ৩(১) এবং ১৯৮৪ সালের ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস কন্ট্রোল রেগুলেশন ৭(১) অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।
তাদের পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও দুই বাংলাদেশি পুরুষ ও ছয় স্থানীয় নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইমিগ্রেশন দপ্তরে হাজির হওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এমন অবৈধ কার্যক্রম প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।