ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাকাউন্ট জোরপূর্বক ফলো করানো নিয়ে যা বলল মেটা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্ক ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের সত্ত্বাধিকারী সংস্থা মেটা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট ফলো করতে ব্যবহারকারীদের বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত সোমবারের অভিষেকের পর কিছু ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন, তারা ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফলো করতে বাধ্য হয়েছেন।

মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বুধবার ব্যাখ্যা করেছেন, এই অ্যাকাউন্টগুলো হোয়াইট হাউস পরিচালনা করে এবং নতুন পদধারীদের প্রতিফলিত করতে সেগুলো হালনাগাদ করা হয়েছে। তিনি এক বিবৃতিতে লেখেন, ‘এই প্রক্রিয়া আমরা আগের প্রেসিডেন্ট বদলের সময়ও অনুসরণ করেছিলাম।’

এই অ্যাকাউন্টগুলো প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের সংক্ষিপ্ত রূপ পোটাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের সংক্ষিপ্ত রূপ ফ্লোটাস নামে পরিচালিত হয়। সংরক্ষিত অ্যাকাউন্টগুলোর পূর্ববর্তী সংস্করণে দেখা যায়, পোটাস ও ফ্লোটাস অ্যাকাউন্টগুলো আগে যথাক্রমে জো বাইডেন ও জিল বাইডেনের নাম ও অফিশিয়াল ছবি বহন করত।

স্টোন আরো বলেন, ‘যেহেতু এই অ্যাকাউন্টগুলো নতুন হাতে হস্তান্তর হচ্ছে, তাই ফলো ও আনফলো অনুরোধ সম্পন্ন হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’

মেটার মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের সময় মানুষকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের কোনো অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট ফলো করানো হয়নি।’

গত সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প দ্রুতই বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ ও নির্দেশ জারি করেন, যার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রত্যাহার ও মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা রয়েছে। তার অভিষেক অনুষ্ঠানে মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গ, নতুন প্রশাসনের উপদেষ্টা হিসেবে থাকা এক্সের প্রধান ইলন মাস্কসহ প্রভাবশালী টেক বিলিয়নেয়াররা উপস্থিত ছিলেন।

মেটার প্রতি আগে থেকেই সমালোচনামুখর ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে ৬ জানুয়ারির দাঙ্গায় জড়িত ব্যক্তিদের ‘প্রশংসা’ করার অভিযোগে মেটা তাকে নিষিদ্ধ করেছিল।

ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সহায়তা করে বাইডেনের ছেলে হান্টার সম্পর্কে অভিযোগ ও করোনা মহামারির সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু কনটেন্ট দমনের জন্য মেটাকে অভিযুক্ত করেছিলেন। জাকারবার্গ এই সিদ্ধান্তের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।

এ ছাড়া গত আগস্টে প্রকাশিত একটি বইয়ে ট্রাম্প লিখেছিলেন, যদি জাকারবার্গ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন, তবে তাকে ‘জীবনের বাকি সময় জেলখানায় কাটাতে হবে’।

তবে নভেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়লাভের পর থেকে জাকারবার্গ তার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। জাকারবার্গ নভেম্বরের শেষের দিকে ট্রাম্পের মার-এ-লাগো বাসভবনে তার সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন এবং অভিষেক অনুষ্ঠানে এক মিলিয়ন ডলার অনুদান দেন।

এ ছাড়া মেটা এই মাসের শুরুর দিকে জানায়, তারা তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রক্রিয়া বন্ধ করে এক্সের কমিউনিটি নোটসের মতো একটি পদ্ধতির দিকে এগোবে, যা ট্রাম্পের পূর্ববর্তী কিছু সমালোচনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। কম্পানিটির মতে, এটি তাদের ‘মৌলিক মুক্ত মতপ্রকাশের অঙ্গীকারে’ ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

সূত্র: বিবিসি, এএফপি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার