ক্যাটাগরি: স্বাস্থ্য

মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল স্থগিত

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পাস করা ১৯৩ জনের ফলাফল যাচাই-বাছাই ২৯ জানুয়ারির মধ্যে, সে পর্যন্ত তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, কোটা থাকবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নিবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর আগে সোমবার সকালে শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। সমাবেশে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল আজকে মধ্যে বাতিলের দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ফল পুনরায় প্রকাশের দাবি করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, কোটার মাধ্যমে আবারও মুজিববাদ ও শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনও কোটা রয়ে গেছে। অবিলম্বে এই কোটা প্রথা বাতিল করতে হবে।

তাদের দাবি, যে কোটার জন্য এত প্রাণ দিতে হলো, সেই কোটা আবার ফিরে এসেছে। এর জবাব বর্তমান সরকারকে দিতে হবে। এই ফল বাতিল করে শুধু মেধার ভিত্তিতে নতুন ফল প্রকাশ করতে হবে।

এদিকে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। সোমবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, আপনারা জানেন যে কোটা বাতিলের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেখানে মূল পরিবর্তন হলো নাতি-নাতনির পরিবর্তে, পরবর্তী প্রজন্মের বদলে সন্তান বলা হয়েছে। অতএব কোটার বিষয়টিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তারপরও এটা স্ক্রুটিনি করা হবে।

তিনি বলেন, এই ১৯৩ জনের (যারা কোটায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন) মধ্যে খুবই আনইউজুয়াল হবে যাদের (বাবার) বয়স ৬৭-৬৮ এবং যাদের সন্তান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে সেটা দেখা হবে। এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কি থাকবে না, এই নীতিগত সিদ্ধান্তটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি রাষ্ট্রের। আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি এটি যাচাই করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জানুয়ারি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৫টি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ছিল ৪০। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী ২২ হাজার ১৫৯ জন, যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৩৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ ছাড়াও উত্তীর্ণ মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন, যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বর ৯০ দশমিক ৭৫।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার