ক্যাটাগরি: অর্থনীতিব্যাংক

ধার শোধে আরও তিন মাস সময় পাচ্ছে দুর্বল ব্যাংক

গ্যারান্টির আওতায় ধার পাওয়া দুর্বল ব্যাংকগুলো প্রথম ধাপের ঋণ শোধ করতে পারেনি। ফলে ধার শোধে ব্যাংকগুলোকে আরও তিন মাস সময় বাড়িয়ে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ সেপ্টেম্বর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে দুর্বল পাঁচটি ব্যাংকে সবল ব্যাংক থেকে ধার নিতে গ্যারান্টি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো প্রথম ধাপে সবল ব্যাংক থেকে ৯০০ কোটি টাকার গ্যারান্টি পান। শর্ত ছিল তিন মাসে এ ধার শোধ করতে হবে। তবে তিন মাস সময় পার হয়ে গেলেও ব্যাংকগুলো অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি। ফলে ব্যাংকগুলোকে ঋণ শোধে আরও তিন মাস সময় বাড়িয়ে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে এমন একটি প্রস্তাবনা গভর্নরের কাছে উপস্থাপন করাও হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ প্রায় ডজনখানেক ব্যাংক থেকে কয়েকটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নামে-বেনামে ঋণ বের করে নেয়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এসব ব্যাংকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে টিকিয়ে রাখেন। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে নতুন গভর্নর হিসেবে যোগদান করে ড. আহসান এইচ মনসুর সব অবৈধ সুবিধা বন্ধ করে দেন। এতে ব্যাংকগুলোর আসল চিত্র বেরিয়ে আসে। ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, এখন গ্রাহকের টাকাও দিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে গত সেপ্টেম্বরে তারল্য সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তহবিল পেতে গ্যারান্টি পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই গ্যারান্টির মাধ্যমে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো ভালো ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিতে পারে।

তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সাতটি ব্যাংক ৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। ব্যাংকটি ২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার তহবিল পায়। এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ১৭৫ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ১ হাজার কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪০০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ২৯৫ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯২০ কোটি এবং এক্সিম ব্যাংক ৭০০ কোটি টাকা তারল্য পায়।

যদিও গ্যারান্টির আওতায় পাওয়া টাকা দিয়ে ব্যাংকগুলোর সংকট কাটেনি।

ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক আবার ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করে। যদিও ‘অতীতের মতো টাকা ছাপিয়ে সরকারকে বা কোনো ব্যাংককে অর্থ দেওয়া হবে না’ গত আগস্টে এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার