ইলিশের মৌসুম না হলেও জেলের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, চট্টগ্রামের নদী ও সাগরে।
জেলে ও মৎস বেপারিরা বলছেন, সাধারণ শীত মৌসুমে বড় আকারের ইলিশ খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু এবার উৎপাদন বেশি এবং দামও নাগালের মধ্যে। এছাড়া রাজধানীর বাজারেও ইলিশ মিলছে ৬০০-৭০০ টাকা কেজি দরে।
অসময়ে ইলিশ ধরা পড়ার কারণ হিসেবে মৎস গবেষকরা মনে করছেন, দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় ইলিশের ওজন, আকার ও উৎপাদন আগের চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে।
তাদের মতে, নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ালে উৎপাদন ক্রমশ বাড়তেই থাকবে আর সেই সাথে রফতানিও করা যাবে।
প্রচলিত ধারণা, বর্ষাকাল ইলিশের ভরা মৌসুম কিন্তু দীর্ঘদিনের এই ধারণা বদলে গেছে এবার। এ বছর শীত মৌসুমে সাগর ও উপকূলে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
মেঘনা ও তেঁতুলিয়াসহ ভোলার কয়েকটি নদীতে গত ১৫ দিন যাবৎ প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। শীত মৌসুমে মেঘনায় এতো ইলিশ এর আগে কখনই ধরা পড়েনি বলেও জানাচ্ছেন এসব এলাকার মৎস্য বেপারি।
ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম থেকে ইলিশ আসছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সোয়ারীঘাট এবং কারওয়ান বাজারের আড়তে।
বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদী থেকে এবার এক কেজি ওজনের ইলিশ বেশি আসছে। সাধারণত এই সময়ে এতো ওজনের ইলিশ খুব কম দেখা যায়। তাই দাম সাধ্যের মধ্যে হওয়াতে এখন ক্রেতারাও খুশি। বিক্রি বেশি হওয়ায় খুশি বিক্রেতাও।
গত বছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। এবার তা আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মৎস্য গবেষকরা জানান, বঙ্গোপসাগরসহ মোহনার নদ-নদীগুলোতে নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সরকারি নিষেধাজ্ঞায় জাটকা ধরা বন্ধ ছিল আর অক্টোবরে মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ছিল ২২ দিন। দীর্ঘ সময় জাটকা ও মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় এবার উৎপাদন ও আকার দুইই বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ফিশ’ এর পর্যবেক্ষণ বলছে, বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের ৬৫ শতাংশই হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাহরাইন এবং কুয়েতে ইলিশ পাওয়া যায়।