ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

রেমিট্যান্সের ডলারের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ১২৭ টাকা

ওভারডিউ পেমেন্টের (বকেয়া পরিশোধ) চাপ, ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর নানান কৌশলে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১২৭ টাকায় পৌঁছেছে।

অন্তত ৬টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে ব্যাংকগুলোকে ১২৬.৫০-১২৭ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই ডলার-টাকার সর্বোচ্চ বিনিময় হার।

এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২৬ টাকায় পৌঁছেছিল। এতদিন পর্যন্ত সেটিই ছিল ডলারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। এরপর থেকে ডলারের দাম ওঠানামার মধ্যে থাকলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরু দিকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১২১.৮০ টাকা। এমনকি, গত মাসের শেষ সপ্তাহেও রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে সর্বোচ্চ ১২২.৫০ টাকা খরচ করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের ডলারের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। মাত্র ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে ডলারের দাম ৪.৫ টাকা বা ৩.৬৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। যেকোনো দৃষ্টিকোণ থেকেই এ ধরনের দামবৃদ্ধি অস্বাভাবিক। আমাদের বাজারে এখন ডলারের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে, তবে সেটি এতো বেশি নয় যে দামটা এভাবে বেড়ে যাবে জানান তিনি।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বছর শেষ হয়ে আসায় অনেক আমদানি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তেল, রাসায়নিক সার ও রমজানের পণ্য আমদানির জন্য বেশি ডলার প্রয়োজন। এই কারণে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। অন্যদিকে আগের মতো সব রেমিট্যান্স হাউস থেকে ডলার মিলছে না। কিছু কোম্পানি অন্য ছোট কোম্পানি থেকে ডলার কিনে নিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে আমাদের ডলার নিতে হয়। ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে। তবে সামনের মাসে দাম আবার কমবে।

ডলার মার্কেট এগ্রিগেটর বলতে মূলত আর্থিক মধ্যস্থতাকারীকে বোঝায়- যে বা যারা ডলারের ক্রেতা এবং বিক্রেতা, উভয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই মধ্যস্থতাকারীরা প্রায়ই ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতামূলক বিনিময় হার পেতে একাধিক উৎস থেকে তারল্য সংগ্রহ করে থাকে। এর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে— ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, জুম, রেমিটলি, মানিগ্রাম এবং কারেন্সিফেয়ার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে ১১ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের অনির্ধারিত এক সভায় এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর এমন দৌরাত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার