হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নগদের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর এ মিশুকের বিরুদ্ধে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানিটির প্রশাসক বদিউজ্জামান দিদারের করা সাধারণ ডায়েরি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
রাজধানীর বনানী থানায় গত ৫ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরিটি (জিডি) করেছিলেন বদিউজ্জামান।
শনিবার আদালতের নন জিআর শাখার এসআই মোস্তফা বলেন, “গত ৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগটি তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আদালত গত ২০ নভেম্বর বাদীকে আদালত হাজির হতে বলেছিলেন। কিন্তু বাদী সেদিন আদালতে আসেননি।
“সেজন্য ঢাকা মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তার অভিযোগটি খারিজ করে দেন।”
জিডির অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা বানানী থানার এসআই ওয়াহিদুল হাসান বলেন, “আমার আগে এসআই মোহাম্মদ আলী সৈকত এ অভিযোগের তদন্তে ছিল। পরে আমাকে দেওয়া হয়। গত ২০ নভেম্বর বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল। বাদী সেদিন হাজির না হওয়ায় আদালত অভিযোগটি খারিজ করে দেয়।”
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ২১ অগাস্ট নগদ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আগের পর্ষদ ভেঙে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর পরদিন তানভীর এ মিশুক এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। নগদকে জড়িয়ে সম্প্রতি যে অপপ্রচার শুরু হয়েছিল, প্রশাসক নিয়োগের মধ্য দিয়ে তার ‘অবসান হবে’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
তবে পরে বদিউজ্জামান দিদার জিডি করে অভিযোগ করেছিলেন, ৪ সেপ্টেম্বর নগদের সাবেক সিইও তানভীরক হোয়াসটঅ্যাপের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। ওই খুদে বার্তার বক্তব্যে ‘হুমকিবোধ’ করছেন তিনি।
তবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ৩৬ মিনিটে নিজের ফেইসবুক পেইজে এ বিষয়ে মিশুক লেখেন, “বদিউজ্জামান দিদার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি তাকে শুধু বলেছিলাম পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে। কারণ, তিনি দায়িত্ব নিয়েই ১ হাজার ৬১৭ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছেন। চাকরিচ্যুতরা তো আদালতে যেতে পারে।
“আমি শুধু বলেছিলাম দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় একটু সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। এটাকে তিনি হুমকি হিসেবে নিয়ে জিডি করেছেন।”
আদালতে হাজির না হওয়ার বিষয়ে বদিউজ্জামান দিদার বলেন, “জিডি হওয়ার পর কী হয়েছে এরপর আমি আর কিছু জানি না। এটা ওখান পর্যন্ত ছিল পরে আমি আর কিছু জানি না। এটা আর কিছু হওয়ারও নাই।”
জিডি খারিজ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তানভীর।
তিনি বলেন, “আদালতের রায়ে আমি স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যা নগদ এবং আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর ভিত্তিহীনতা প্রমাণ করেছে। সততা ও স্বচ্ছতা সবসময়ই আমার পেশাগত জীবনের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই সিদ্ধান্ত আমাকে ফিনটেক খাতে আরও অবদান রাখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।”
ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর যাত্রা ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় নগদকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৮ অগাস্ট নগদ ও কড়িকে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিগত অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।