ইয়াওমুল জুমা। সপ্তাহের সেরা মহিমান্বিত দিন। এ নামে আল্লাহ তাআলা একটি সুরা নাজিল করেছেন। সুরাটিতে জুমার পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ৪ শ্রেণির লোক এবং ওজর ছাড়া জুমা তরক করা কবিরা গুনাহ। তারা কারা যাদের জন্য জুমা আবশ্যক নয়?
জুমার নামাজ পড়া ফরজ। জুমার দিন দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে আগে আগে জুমা আদায় করতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। কোরআনে এসেছে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ)
তবে ৪ শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। হাদিসে পাকে তাদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হজরত ত্বারিক ইবনু শিহাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার নামাজ সত্য। যা প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাতের সাথে আদায় করা ফরজ। তবে চার শ্রেণীর লোকের জন্য তা ফরজ নয়। তারা হলেন-
১. ক্রীতদাস।
২. নারী।
৩. শিশু ও
৪. রোগী।’ (আবু দাউদ,)
জুমার নামাজ পরিত্যাগ করার পরিণাম খুবই ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে এ ব্যাপারে সাবধান করেছেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিন জুমা বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আর এরপর তারা (জুমা পরিত্যাগ কারীরা) আত্মভোলা হয়ে যাবে। এরপর তারা সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে।’ (মুসলিম)।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিন জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করলো। (মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিয়মিত জুমা আদায় করা। হাদিসে উল্লেখিত ৪ শ্রেণির ব্যক্তি ছাড়া কারো জন্য জুমা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। কেননা জুমা আদায় করা ফরজ। কেউ তা থেকে বিরত থাকলে ফরজ তরকের কবিরা গুনায় লিপ্ত হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমা আদায় করার তাওফিক দান করুন। জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত পেতে জুমার দিনের যথাযথ হক আদায় করে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।