রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের শিকার ইউক্রেনকে ২০০০ কোটি ডলার অর্থসহায়তা দিয়েছে অন্যতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদের লাভের অঙ্ক থেকেই এই অর্থ ইউক্রেনকে দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এই অর্থনৈতিক সহায়তা জি৭ সদস্য দেশগুলোর জুন মাসে ঘোষিত ৫০ বিলিয়ন ডলার প্যাকেজের একটি বড় অংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, এই সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে রাশিয়া তার অবৈধ যুদ্ধের খরচ বহন করবে, করদাতারা নয়।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিছুদিন পর দায়িত্ব ছাড়বেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হবেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্প কিয়েভকে আর্থিক সহায়তা দেওয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের অপচয় বলে অভিহিত করেছেন। তাই নতুন মার্কিন প্রশাসনের অধীনে এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, ২০ বিলিয়ন ডলার বিশ্বব্যাংকের একটি তহবিলে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ইউক্রেন এই অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। তবে, বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এই অর্থ সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন প্রশাসন এই অর্থের অর্ধেক সামরিক সহায়তার জন্য বরাদ্দ করতে চেয়েছিল। তবে এর জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল।
এপ্রিল মাসে ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা অনুমোদনের আগে মাসের পর মাস হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নতুন করে অনুমোদন পেতে দেরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ২০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা ইউক্রেনকে “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন” দেবে, যা দেশটির ‘অযাচিত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে’ প্রতিরক্ষায় সহায়ক হবে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের পর জব্দ করা প্রায় ৩২৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মুনাফা কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা শেষে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
অক্টোবরে জি৭ দেশগুলো ঘোষণা করে, এই জব্দকৃত সম্পদের মুনাফা থেকে আগামী ৩০ বছরে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হবে। এ বছরের শেষ নাগাদ এর প্রথম কিস্তি প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একইভাবে ১৮ বিলিয়ন ইউরোর বেশি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ইয়েলেন বলেন, এই ৫০ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা, হাসপাতাল এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা চালু রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই সহায়তা এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনসহ বেশ কিছু এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হারাচ্ছে এবং যুদ্ধে রুশ অগ্রগতি ইউক্রেনের সৈন্যদের মাঝে হতাশাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।